রাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে অবস্থান

রাবি প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. নাসিমা জামানের পদত্যাগ দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিভাগের ১১জন শিক্ষক। রোববার সকাল ৯টা থেকে বিভাগের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করে তারা। কর্মসূচি দুপুর ১টা চলবে।

এ ব্যাপারে আন্দোলনকারী শিক্ষক অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, ‘সভাপতি ও একজন শিক্ষিকা বিভাগের অন্য শিক্ষকদের নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছে। এতে করে বিভাগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। বিগত ৬০ বছরে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। আমরা আমাদের বিভাগের সুনাম রক্ষা করার জন্য এই স্বেচ্ছাচারী সভাপতির পদত্যাগ চাই। পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’

জানতে চাইলে রুখসানা পারভীন বলেন, ‘বিভাগের ১১জন শিক্ষক একজোট হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। একই সাথে এসব কর্মসূচি ডেকে তারা তাদের অপরাধগুলো ঢাকার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

জানা যায়, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষকদের নামে ‘মর্যাদাহানিকর’ ও ‘কটুক্তিমূলক’ কথাবার্তা বলার অভিযোগ তোলে কয়েকজন শিক্ষক। বিষয়টি সমাধানে ১১ শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৭ জুলাই বিভাগের একাডেমিক কমিটির তলবি সভা আহ্বান করা হয়। সভা শুরুর কিছুক্ষণ পূর্বে উপ-উপাচার্যের মৌখিক নির্দেশ আছে জানিয়ে বিভাগের সভাপতি নাসিমা জামান সভা স্থগিত করেন। তবে উপ-উপাচার্য বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ৩১ জুলাই রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিভাগের ১১ শিক্ষক উপাচার্যকে লিখিত অভিযোগ দেন। ওইদিন বিকেলে রুখসানা পারভীনও বিভাগের অধ্যাপক ও রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ‘একাডেমিক ও যৌন হয়রানির’ অভিযোগ তোলেন।

ঘটনার দুইদিন পর ২ আগস্ট ৭টি কারণ উল্লেখ করে বিভাগীয় সভাপতি নাসিমা জামানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে উপাচার্যকে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ১১ শিক্ষক। পরদিন তাদের বিরুদ্ধে অর্থ-আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ তুলে উপাচার্যকে পাল্টা অভিযোগ দেন নাসিমা জামান।

একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সরাসরি যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন রুখসানা পারভীন। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান। সেসময় বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে শুধু সভাপতি নাসিমা জামান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী যা ‘তিনি করতে পারেন না’ বলে দাবি ১১ শিক্ষকের।

সবশেষ গত শুক্রবার ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় সভাপতি ও শিক্ষিকা রুখসানার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা ১১ শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যাপক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ‘হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ ‘মিথ্যা’ দাবি করেন। তারা দাবি করেন- ‘বিভাগের সভাপতির প্রত্যক্ষ মদদে রুখসানা পারভীন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক কটুক্তি করে আসছিলেন তার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করায় তাদের বিরুদ্ধে সভাপতি ও ওই শিক্ষিকা এসব অভিযোগ তুলছেন।’

 

স/আ