রাবিতে ছাত্রলীগ নেতার পুরো নাম বলতে না পারায় শিক্ষার্থীকে মারধর

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক বোরজাহান আলীর পুরো নাম বলতে না পারায় তার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার শিলু হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলে ৩১৬ নম্বর কক্ষে থাকেন। অপরদিকে, মারধরের অভিযোগ ওঠা বোরজাহান আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিলু হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে  বলেন, “আজ ফারুক হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য ছাত্রলীগের কর্মীরা রুমে এসে আমাকে ডেকে যায়। এরপরে ওই হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বোরজাহান আমার কক্ষে আসে। আমি বললাম, একটি বই পড়ছি, দুই-এক মিনিটের মধ্যেই শেষ হবে, শেষ করেই আসছি। তখন ওই নেতা বলে, ‘আমাকে চেন?’ আমি বলি, চিনি। আমাকে তার নাম বলতে বললে আমি বলি, বোরজাহান। কিন্তু ‘বোরজাহান আলী’ না বলায় বলায় সে আমার মাথায় ও পেটে কিল-ঘুষি মারে।”
বোরজাহান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘আজকে আমাদের কর্মসূচি ছিল, কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমাদের কর্মীরা হলের প্রত্যেক রুমে রুমে গিয়ে সবাইকে ডেকে আসে। আমিও পরে ডাকতে গেছি। শিলুকে ডাকতে গেলে ও আমার সাথে বেয়াদবি করে। তাই আমি তাকে ধাক্কা দিয়েছি, মারিনি।’
এদিকে কর্মসূচিতে আসা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব হলেই শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মসূচীর আগে বিভিন্ন হলের সামনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে আছেন। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বা পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বের হলে কর্মসূচীতে যাবার জন্য তাদের আটকানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কোনও কর্মসূচি থাকলে শিক্ষার্থীদের রুমে রুমে গিয়ে তাদের জোড় করে কর্মসূচিতে নিয়ে আসা হয়। কর্মসূচিতে আসতে না চাইলে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। কর্মসূচিগুলোতে বড় মিছিল নিয়ে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে হলগুলোর প্রতিযোগিতার কারণে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করার প্রবণতা বাড়ছে বলেও অভিযোগ অনেকের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘আমি প্রত্যেক হলের নেতাকর্মীদের বলে এসেছি, কাউকে জোড় করে কর্মসূচিতে আনা যাবে না। শিক্ষার্থীদের আসার জন্য বলবে, শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় আসলে ভাল, না আসলে সমস্যা নাই। তারপরও এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কর্মসূচি শেষে বসে বিস্তারিত জানার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স/শ