রাণীনগরে হাটের ড্রেন-রাস্তার বেহাল দশা, চরম দুর্ভোগ

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী রাণীনগর কালিবাড়ি হাটের ড্রেন ও রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ পথচারীরা যেন দেখার কেউ নেই। দিন যাচ্ছে, প্রতি বছর এই হাটের ইজারার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বিন্দুমাত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে না হাটের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পরিসর। অনেকের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এই হাটের সংস্কার কাজ। তবুও কারো নজর নেই জনগুরুত্বপূর্ণ হাটটির দিকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী হাট রাণীনগর কালিবাড়ি হাট। এই হাটে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেনাকাটা হয়। উপজেলার আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি এই হাটে এনে প্রতিদিন খুচরা ও পাইকারী বিক্রয় করে। দিন যাচ্ছে প্রতি বছর এই হাটের ইজারার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু বিন্দুমাত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে না হাটের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পরিসর। বর্তমানে এই হাটের ড্রেনের ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন যাবত হাটের একমাত্র ড্রেনের ব্যবস্থার কোন সংস্কার না করায় ড্রেনে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা ড্রেন উপচে প্রবেশ করছে হাটের নিম্নাঞ্চল গুলোতে। এতে করে বর্তমানে হাটের সব জায়গায় বিরাজ করছে দুর্গন্ধ। প্রতিদিন হাটে এসে ক্রেতা ও বিক্রেতা, যানবাহন চালকসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ আরো চরমে রূপ নেয়। তবুও কারো নজর নেই এই হাটের দিকে।

বেশ কয়েক বছর আগে হাটের মাছপট্টি ও তরকারিপট্টির কিছুটা সংস্কার কাজ করা হয়। এরপর কোন সংস্কার কিংবা উন্নয়নের ছোঁয়া স্পর্শ করেনি এই হাটটিতে। সেই সময় এই হাটের বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য হাটের মধ্যে দিয়ে তৈরি করা হয়েছিলো একটি ড্রেন। বর্তমানে এই ড্রেনের অবস্থা খুবই করুন। হাটের প্রবেশ মুখে সদর ইউপি ভূমি অফিস সংলগ্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবত ড্রেনের উপর নেই স্লাব। এছাড়াও দীর্ঘদিন যাবত এই ড্রেন পরিস্কার ও সংস্কার না করার কারণে ড্রেন পূরণ হয়ে গেছে। এছাড়াও ড্রেনের শেষ মাথায় বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে পানি বের হতে না পারায় হাটের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার। ড্রেন উপচে এই সব ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে হাটের বিভিন্ন জায়গায়। হাটের আশেপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় হাটের এখানে-সেখানে ও ড্রেনের মধ্যে। এই সব নানা কারণে বর্ষা মৌসুমে হাটে এসে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শত শত ক্রেতা ও বিক্রেতারা। কিন্তু এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই লাগেনি এই হাটে। অনেকের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে হাটের সংস্কার কাজ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হোসেনসহ আরো অনেকেই বলেন, প্রতিবছর সরকার এই হাট থেকে লাখ টাকা রাজস্ব হিসেবে আদায় করছেন। কিন্তু হাটের মান উন্নয়নের জন্য কারো কোন দৃষ্টিপাত নেই। হাটের ড্রেনের ব্যবস্থা, সরু সরু রাস্তা ও কিছু কিছু শেডের দীর্ঘদিন যাবত কোন সংস্কার না করায় সেগুলো এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ড্রেনের ব্যবস্থার অবস্থা খুবই করুন। হাটের ড্রেনের ব্যবস্থার সংস্কার ও ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও হাটের যে সব জায়গা অবৈধভাবে বেদখল হয়ে রয়েছে প্রশাসন যদি সেই জায়গাগুলো উদ্ধার করে হাটের পরিসর আরো বদ্ধি করে তাহলে সরকার এই হাট থেকে দ্বিগুন পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারেন। তাই হাটের ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থে আধুনিক মানের হাটে পরিণত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান পিন্টু দেশের বাহিরে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, হাটের এই বেহাল অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। হাটের ড্রেনের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

স/শা