রাণীনগরে সিম্বা বিদ্যালয়ের মাঠ পানির নিচে: সমাবেশ থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সিম্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানির নিচে নিমজ্জিত। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলা-ধুলা ও জাতীয় সমাবেশ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর। তবুও নজর নেই সংলিষ্ট কর্তৃপক্ষের। যেন দেখার কেউ নেই। স্কুলমাঠটি দ্রুত মাটি দিয়ে ভরাট করে উঁচু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিম্বা গ্রামে অবস্থিত সিম্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৮৮৫ সাল থেকে এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। বিদ্যালয়ে দুই শিফটে প্রতিদিন ১৩৬ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করতে আসে। কিন্তু ঐতিহ্যপূর্ণ এই বিদ্যালয়টিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। কয়েক বছর পূর্বে একটি নতুন ১ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের একমাত্র মাঠটি বছরে প্রায় বর্ষা মৌসুমে ২ থেকে ৩ মাস পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। যার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলা-ধুলা ও জাতীয় সমাবেশ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এতে করে শিক্ষার মনোরম পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়টি রাণীনগর-আবাদপুকুর সড়কের পাশে অবস্থিত। এই রাস্তার পাশ দিয়ে পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে পানি বের হওয়ার জন্য একটি ছোট খাল বয়ে গেছে। আর মাঠটি পার্শ্ববর্তী জমির মাঠ থেকে অনেক নিচু বলে অনেক সময় তা পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বহুবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানোর ফলে একবার মাঠে মাটি দেওয়া হয়। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে জানা গেছে। তাই মাঠটি নিচু হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকে। এলাকাবাসী ও সচেতন মহল অতি দ্রুত মাঠটিতে মাটি দিয়ে ভরাট করে শিক্ষার্থী এবং এলাকার ছেলে-মেয়েদের খেলা-ধুলা করার জন্য আধুনিক মানসম্মত মাঠে পরিণত করতে সরকার এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জড়ালো পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওসমান গুনি, ইউসুব আলী, মোছা: রিয়া মুনিসহ আরো অনেকেই বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠটি বছরে প্রায় বর্ষা মৌসুমে ২-৩ মাস পানির নিচে নিমজ্জিত থাকার কারণে আমরা জাতীয় সমাবেশ করতে পারি না। অবসর সময়ে খেলা-ধূলা করতে পারি না। বিদ্যালয়ে এসে সারাক্ষণ ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে থাকতে হয়। আমরা বিদ্যালয়ে আধুনিক মানসম্মত একটি খেলার মাঠ চাই, যেখানে বিদ্যালয়ে এসে অবসর সময়ে এবং বিদ্যালয় শেষে মনের আনন্দে বিভিন্ন খেলা খেলতে পারব।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা: মনোয়ারা খাতুন জানান, এই বিদ্যালয়টি খুবই অবহেলিত। বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের ঘরে বন্দি হয়ে একঘেয়েমী পরিবেশে পাঠ গ্রহণ করতে হয়। তারা খোলা মাঠে না পারে খেলতে আর আমরাও শিক্ষার্থীদের নিয়ে না করতে পারছি জাতীয় সমাবেশ। তাই অতি দ্রুত বিদ্যালয়ের এ মাঠে মাটি দিয়ে ভরাট করে মাঠটি উঁচু করা অতিব প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এই বিদ্যালয়ের মাঠটিতে মাটি ভরাট করে মাঠটি উঁচু করার জন্য।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) টুকটুক তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট করে মাঠটি উঁচু করার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রয়োজন মতো বরাদ্দ পেলেই এই বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট করে মাঠটি উঁচু করবো।

স/শা