ঈদুল আযহা: রাণীনগরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের

রাণীনগর প্রতিনিধি: সপ্তাহ পরই ঈদুল আযহা। একে ঘিরে কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় ঘনিয়ে আসছে। এতে বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। একদিকে হাপরে আগুনের শিখা, অন্যদিকে হাতু পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি। শহর থেকে শুরু করে গ্রামসহ সবখানেই কামাররা ব্যস্ত পুরোনো দা, ছুরি এবং বঁটিতে শান দিতে। আবার মোটরচালিত মেশিনে শাণ দেয়ার কাজ চলছে পুরানো গুলোর। কেউবা ব্যস্ত নতুন নতুন দা-ছুরি তৈরিতে। তাই দম ফেলার যেন সময় নেই তাদের। সারা বছর অনেকটা অলস সময় পার করলেও এখন কামাররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানি দাতারা কোরবানির পশু কাঁটা-ছেড়া করার জন্যে পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত সবক’টি দা ছুরি, ধামা আর বটি শাণ দেয়ার জন্যে নিয়ে আসছে কামারদের কাছে। ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা।

কামারের দোকানে অনেকেই বসে আসছেন একজন ক্রেতা ছমির উদ্দিন বলেন, কয়েক দিন আগে একটা চাপাতি এবং বড় চাকু দিয়েছি। তা তৈরি না হওয়ায় আধা ঘন্টা বসে থেকে তা তৈরী করে নিলাম। কামার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। পোড়া কয়লার গন্ধ, হাপরের হাঁসফাঁস আর হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে চকচকে ধারালো দা, চাপাতি, ছুরি, বঁটিসহ নিমিষে মাংস কাটা-কুটার উপকরণ।

কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণ গুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম। লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৪০০ টাকা, নরমাল ২৫০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, বঁটি ২০০ থেকে ৪০০, চাপাতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়।

বিক্রেতারা আরও জানান, বছরের ১১ মাসে তাঁদের ব্যবসা হয় এক রকম আর কোরবানির ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয় আরেক রকম। ঈদুল আযহা এলেই উপজেলার কামারের দোকানিদের বেচাবিক্রি ও ব্যস্ততা বেড়ে যায়।

রাণীনগর সদরের বটতলীর কামার ভবান চন্দ্র মহন্ত জানান, বছরের বাঁকি সময়টার বেশির ভাগই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। কোরবানি এলেই বেচাবিক্রি ও লোকজনের মরিচা পড়া দা, বঁটি, ছুরি ইত্যাদি সরঞ্জাম ধারালো করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ কয়লা না পাওয়ায় একটু দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলকার কামাররাও একই কথা জানান।

 

স/শা