রাণীনগরে এবারও নির্মান হলোনা ফসল রক্ষা সেই অভিভাবকহীন বেরিবাঁধ!

রাণীনগর প্রতিনিধি:

নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর রাণীনগর উপজেলার অংশের নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর বেরিবাঁধের অভিভাবক কে ? এটা নির্নয় না হওয়ায় গত ৪০ বছরেও সংস্কারের উদ্যোগ নেইনি কেউ। ফলে ধীরে ধীরে বাঁধ ভেঙ্গে ও মাটি ধ্বংসে একদম জমির আইলের মতো শরু হয়ে পরেছে।

চলতি শুষ্ক মৌসুমে ফসল রক্ষা সেই বেরিবাঁধ নির্মান কিম্বা সংস্কার না হওয়ায় আগামী বছর বন্যা হলে আবারো বাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল বিলিনসহ লাখো মানুষের ভাগ্য ও বসতির ক্ষতির আশংকা করছেন এলাকাবাসি।

জানা গেছে, নওগাঁর ছোট যমুনা নদী জেলার রাণীনগর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে আত্রাই নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। প্রায় ৮০ দশকে গোনা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সময়ের চেয়ারম্যান আহাদ আলী প্রামানিক খাদ্যের বিনিময়ে কর্মসূচির আওতায় নান্দাইবাড়ী এলাকায় প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা কাম বেরিবাঁধ নির্মান করেন। এরপর থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে তৎকালীন সময়ে নির্মিত বাঁধের দুই পাশের মাটি ভেঙ্গে একদম জমির আইলের মতো সরু হয়ে হয়ে পরেছে। প্রতিবছর ওই স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে রাণীনগর এবং আত্রাই এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও চাষকৃত মাছ ভেসে যায়। এছাড়া শত শত বসতি ভেঙ্গে পরে। ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়।

ওই এলাকার মো: রফিকুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমানসহ আরো অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন বাঁধটি সংস্কার না করায় এমন ভয়াবহ পরিস্থীর সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, বন্যা আসলেই কর্মকর্তারা বাঁধ রক্ষায় তোর জোর শুরু করেন। কিন্তু পানি নেমে গেলে কারো খোঁজ পাওয়া যায়না। তাদের মতে, সংস্কার হবেই বা কি করে, যেখানে বাঁধের অভিভাকই নেই সেখানে কাজ করবে কে ?

তারা আরো জানান, ২০১৮ সালে বন্যায় নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেরিবাঁধ ভেঙ্গে গেলে নওগাঁ-আত্রাই পাকা সড়কের রাণীনগর সিমানার মিরাপুর, ঘোষগ্রা,কৃষ্ণপুরসহ প্রায় ৫ জায়গায় ভেঙ্গে যায়। ওই বছরই বন্যায় রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান বন্যার পানিতে তলে যায়। গত বছর একই স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলে নষ্ট হয়। প্রতি বছর একই স্থানে ধারাবাহিক ভাবে বাঁধ ভেঙ্গে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলেও নতুন করে বাঁধ নির্মানে কিম্বা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেনা কেউ। বসতি ও ফসল বাঁচাতে বাঁধটির মালিকানা নির্নয় করে দ্রুত নির্মানের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান জানান, বাঁধটি সংস্কারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয় পর্যন্ত ধর্ণা দিয়েছি কিন্তু লাভ হয়নি। কারণ বাঁধটি কোন দপ্তরের আওতায়, কে এই বাঁধের অভিভাবক তা কেউ বলতে পারেনা। ফলে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগও কেউ নিচ্ছে না। কয়েক বছর ধরে এমপি সাহেবের বিশেষ বরাদ্দ থেকে ৪০ দিনের কর্মসূচির লোক দিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় যতটুকু সম্ভব সংস্কার করা হতো। কিন্তু এবার বাঁধটির দায়িত্ব পানি উন্নয় বোর্ড নিয়েছে এবং প্রায় ৪৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে বাঁধ কাম রাস্তা নির্মানের জন্য এমনটি জানার কারনে এখনো সংস্কারে হাত দেয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংসু কুমার সরকার বলেন, নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেরিবাঁধটি আমাদের আওতায় নয়। তবে সংস্কারে যদি বিশেষ কোন নির্দেশনা বা বরাদ্ধ আসে তাহলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে।

স/স্ব