রাজশাহী-২: ওয়ার্কার্স পার্টিকে এবারও ছাড় দিচ্ছে আ. লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ১৯৮৮ সালের পর আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী এমপি হতে পারেননি। সর্বশেষ ১০ বছর ধরে আসনটি ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার কবজায়।

আওয়ামী লীগের শরিক দল হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা ১৪ দলীয় জোটেও ভালো প্রভাব রাখেন। আগামী নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ওয়ার্কার্স পার্টি জোটগতভাবেই নির্বাচনে যাবে—এমনটি প্রায় পাকা। সে ক্ষেত্রে আসনটিতে ১৪ দলের মনোনয়ন এবারও ওয়ার্কার্স পার্টিই পাচ্ছে বলা যায়।

সম্প্রতি হাতে আসা ১৪ দলের শরিক দলের প্রার্থীদের তালিকায় চূড়ান্ত হওয়া নামগুলোর মধ্যে রাজশাহী-২ আসনে ফজলে হোসেন বাদশাকেই এবারও মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হয়। এরপর আরো খোলামেলা হয় বিষয়টি। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও ধরে নিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রভাবশালী নেতা বাদশাকে সরানোর চিন্তা করবে না আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। সরাতে গেলে ১৪ দলের জোটেই ফাটল সৃষ্টি হতে পারে—এমন চিন্তা রেখে এই সময়ে এসে কোনো ঝুঁকি নিতে চাইবেন না মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা। ফলে আগামী নির্বাচনে রাজশাহী-২ আসনে বাদশার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত বলেই ধরে নিচ্ছে সাধারণ ভোটাররাও।

এদিকে গত কয়েক বছরে এমপি ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দূরত্ব অনুধাবন করা গেলেও সেটি অনেকটা কমে এসেছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিশেষ করে গত সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের পাশে থেকে তাঁর বিজয় নিশ্চিত করতে বাদশার বড় ভূমিকা ছিল। ফলে ওই নির্বাচনের সময় থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্বটা কমে আসে বাদশার।

এর মধ্যেও এখনো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আশায় বুক বেঁধে আছেন দলটির রাজশাহী মহানগরীর অন্তত হাফ ডজন নেতা। তাঁরা এবার সদর আসনটি আর জোটকে ছেড়ে না দিতে দাবি জানান কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। আর এ নিয়েই মূলত বাদশার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের দূরত্বটা তৈরি হয়। তবে জোটগতভাবে দল যাঁকেই মনোনয়ন দেবে শেষ পর্যন্ত তাঁর হয়েই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে নামবে—এমন চিন্তাভাবনাও রয়েছে তাদের মধ্যে।

সূত্র মতে, রাজশাহী সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে থাকা নেতাদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সদস্য আহসানুল হক পিন্টু, মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীর নাম এখনো শোনা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে আহসানুল পিন্টু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এখানে প্রতিটি নির্বাচনেই প্রার্থীর সংখ্যা অনেক থাকে। এরই অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী থাকবেন অনেকেই। আমিও দলীয় মনোনয়ন চাইব। তবে দল শেষ পর্যন্ত যাঁকে মনোনয়ন দেবে তাঁর হয়েই কাজ করব। দলীয়ভাবে হোক আর জোটগতভাবেই হোক, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ’

ডাবলু সরকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মনোনয়ন আমি চাইব। এরপর দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ’

জানতে চাইলে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘জোটগতভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ইতিবাচক। এই সম্পর্কের কারণে এবং রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে জোটগতভাবে আমি মনোনয়ন পাব বলে আশা রাখি। রাজশাহীর নবনির্বাচিত মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আগামীতেও রাজশাহীর উন্নয়নে কাজ করতে পারব। এতে রাজশাহীর উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। ’