রাজশাহী নগরীর ফুটপাতের নয়, যেন দুর্ঘটনার ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


শনিবার বেলা ১২টার দিকে রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নগরীর ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন রেলগেটের দিকে। ঝকে ঝকে ফুটপাত দিয়ে নিশ্চিন্তেই হাঁটছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে নগর ভবনের সামনেই তার একটি পা ঢুকে যায় ভাঙ্গা স্লাবের মধ্যে। এতে বাম পায়ে মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হোন রবিউল ইসলাম।

অথচ কয়েকদিন আগেই সেখানকার টিনের পাতের স্লাবটি সরিয়ে বসানো হয় রড-সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা স্লাব। কিন্তু সেটিও এক মাসও গেলো না। ভেঙে ফাঁক-ফোকর বের হয়ে গেছে এরই মধ্যে। আর তাতেই ঘটছে বিপত্তি। পথচারীদের পা ঢুকে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার কোথাও কোথাও ফুটপাতে বসেছে বাজার। ফলে পথচারীদের কাজে আসছে না সেটি।

সরেজমিন রাজশাহী নগরী ঘুরের দেখা গেছে, এমন ঘটনা শুধু নগর ভবনের সামনেই যে ঘটছে-তা নয়, কোথাও কোথাও এখনো ফুটপাতের কাজ শেষ করা হলেও নিচ দিয়ে যাওয়া ড্রেনের মুখ খোলা রাখা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও বসানো টিনের স্লাব ভেঙে গেছে। কোথাও লোহার স্লাব চুরি হয়ে গেছে অব্যবস্থাপনার কারণে। আর তাতেই পায়ে হেঁটে যাওয়া পথচারীরা পড়ছেন মারাত্মক দুর্ঘটনায়। কখনো কখনো কেউ একেবারে ড্রেনের ভিতরে গিয়ে পড়ছে খেয়াল না করে হাঁটার কারণে।

নগরীর রেলগেট এলাকার ব্যবসায়ী রানা বলেন, ‘কয়দিন পর পর দেখি ফুটপাতের কাজ করছে। আবার কয়দিন পর পর দেখি ড্রেনের মুখের স্লাব বসাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ স্লাবই ৬ মাসও থাকে না। বসানোর দুই-একদিনের মধ্যেই ভাঙতে শুরু করে। কি ফুটপাত নির্মাণ করে, আর কি স্লাব বসায় কে জানে?’ তবে এগুলো দেখার কেউ নাই। ভালোভাবে তদারিক করলে এমন দশা হতো না।

কাদিরগঞ্জ এলাকার পথচারী আকবর হোসেন বলেন, ‘অনেক স্থানেই ফুটপাতের স্লাব নাই। কোথাও থাকলেও ভাঙা। এতে করে পথচারীরা প্রতি-নিয়তই পড়ছেন দুর্ঘটনায়। সিটি করপোরেশনের অবহেলা বা অবব্যস্থাপনার কারণে যারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দিবে কে?’

এদিকে রাসিকের ফুটপাত সংস্কার ও নির্মাণ নিয়েও রয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন। এ কাজেও ঠিকমত তদারিক না থাকায় বার বারর ফুটপাত নির্মাণ বা সংস্কার করতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন নগরবাসী। নগরীর সাহেব বাজার শিরোইল এলাকার বাসিন্দা মানজাল হোসেন বলেন, ‘মাঝে মাঝেই দেখা যায় ফুটপাতের কাজ করতে। আবার কয়দিন পরেই ভেঙে চৌচির। ফুটপাত করা হয়েছে পথচারীদের হাঁটার জন্য, কিন্তু সেখানে বাজার বসিয়েছেন কাউন্সিলর। ফলে ফুটপাত থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটি সাধারণ মানুষের কাজে আসছে না। কিন্তু এটি নির্মাণ ও সংস্কারের নামে ঠিকই কোটি কোটি টাকা জলে ঢালা হচ্ছে।’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী খাইরুল বাসার জানান, মাঝে মাঝেই ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। জরিমানা করা হয়। কিন্তু তার পরেও কোথাও কোথাও দোকানপাট বসছেই। আবার ফুটপাতের স্লাবগুলো যেখানে ভাঙা আছে, সেগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। যেখানে নাই, সেখানে নতুন করে বসানো হচ্ছে। এগুলো চলমান প্রক্রিয়া।’

স/আর