রাজশাহী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের র‍্যাগ-ডে পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহী কলেজের ২০১৮ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের র‌্যাগ ডে পালিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টায় র‍্যালী শেষে কলেজ অডিটোরিয়ামে কেক কাটার মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘র‌্যাগ ডে’ এর উদ্বোধন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আল-ফারুক চৌধুরী।
র‌্যাগ-ডের দিন শিক্ষার্থীরা জমকালো প্রচন্ড কুয়াশা আর শীতকে উপেক্ষা করে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে পুরো ক্যাম্পাসে বর্ণিল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে কলেজ মাঠে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহনে মানব ‘রাজশাহী কলেজ ব্যাচ-১৮’ তৈরি করেন । এরপর কলেজ অডিটোরিয়ামে কেক কেটে অনুষ্টানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ।
মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী বাদশা বুলবুল তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, একজন শিক্ষার্থীর জন্য রাজশাহী কলেজ হলো চরম ও পরম আকাঙ্ক্ষার জায়গা। এখানে আসার প্রথম দিন থেকেই পড়াশুনা, ক্যারিয়ার, ক্যাম্পাস, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সে নানারকমের স্বপ্ন বুনতে থাকে এ কলজের প্রতিটি শিক্ষার্থী। আস্তে আস্তে এ ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে মমতাময়ী মায়ের মতো আপন। ছুটির দিনগুলোয় বাসায় গেলেও প্রাণের ক্যাম্পাসে তাদের মন পড়ে থাকে। ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে প্রতিদিন ক্লাস করা, আড্ডা, বিতর্ক, বিভিন্ন ক্যারিয়ার গঠনমূলক প্রতিযোগিতা, অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবে পার হয় জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো।
মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার কবির বলেন, র‌্যাগ ডে তে সবাই একসঙ্গে আনন্দ করলেও পরে আনন্দের ঘোর কাটছে। মনে হয় মায়ার ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রিয় আঙিনাতে থাকার সময় শেষ। একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার রুমি বলেন, সময়ের স্রোতে ভেসে কখন যে কলজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি টেরই পাইনি । সময়ের হিসাবে চার বছর অত্যন্ত অল্প সময় হলেও দেড় বছরে জমা হওয়া শত, সহস্র স্মৃতি আজ মনের পর্দায় ভেসে উঠছে। কলেজ জীবনের একেকটা সেকেন্ড যেন একেকটা স্মৃতির ভান্ডার।
র‌্যাগ-ডে সম্পর্কে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল আশিক বলেন, ক্যাম্পাসের প্রথম দিন থেকে শুরু করে অজস্র ঘটনা এদিন মনে পড়ে যাচ্ছে। আসলে নাচ-গান আর ফুর্তি করে র‌্যাগ-ডে পালন করলেও মনের ভেতরে বেদনা জমা হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে কোনো একটা প্রিয় জিনিস হারাতে যাচ্ছি।
এদিকে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে নিজ হাতে কেক তুলে খাওয়ান দেশসেরা এ কলেজের অধ্যক্ষ। তারপর নাচ-গান, ম্যাজিক, শেষে তারা দুপুরের খাবার খান। এরপর র‍্যাম্প শো, রাজশাহীর বিভিন্ন কমার্শিয়াল ব্রান্ডের শো, ফটোসেশন,ফানুস উড়ানো, কালার ফেষ্টের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় র‌্যাগ-ডে পালন। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিনয়, কৌতুকের মধ্য দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। সন্ধার পর উৎফুল্ল ভাবে ফানুস উড়ানোর পর রঙ খেলায় মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা।
রঙ খেলা শেষে বিদায়লগ্নের মুহূর্তে এসে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বস্তুতপক্ষে কলেজ জীবনের সময়ই হলো একজন শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। আর র‌্যাগ-ডে পালন করে সে জীবনের আনুষ্ঠানিক ইতি টানা। প্রকৃতপক্ষে র‌্যাগ-ডের উপরে আনন্দ-মাতামাতি থাকলেও ভেতরে থাকে গুমোট বেদনা।
স/অ