রাজশাহীসহ যেসব হাসপাতালে কাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ)। প্রাথমিকভাবে ১২টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন, যা পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চালু করা হবে।

বুধবার (২৯ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলা, খুলনা বিভাগের ৪ জেলা, রাজশাহী বিভাগের ৩ জেলা, রংপুর বিভাগের ৫ জেলা, বরিশাল বিভাগের ৩ জেলা এবং সিলেট বরিশাল বিভাগের ৫ জেলায় ইনস্টটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

এবিষয়ে বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক বিবৃতিতে বলেন, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল (৩০ মার্চ) বিকেল ৩টা থেকে দেশের প্রায় ৫০টি সরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যমান সরকারি স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি ‘বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত’ সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন ও বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করাবেন।

তিনি বলেন, আগে যেখানে বিকেলে বা সন্ধ্যায় চিকিৎসা নিতে মানুষকে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হতো, এখন প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট করা হাসপাতালগুলোতে দুপুরের পরও নামমাত্র ফি দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের রোগী দেখাতে পারবেন, চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন লাখ লাখ সাধারণ মানুষ।

জাহিদ মালেক বলেন, আগামীকাল একযোগে এসব হাসপাতালগুলোর সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। এমনকি দেশের মানুষ এই সেবায় সন্তুষ্ট হলে, খুব দ্রুতই পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।

যেসব হাসপাতালে চালু হচ্ছে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস
> ঢাকা বিভাগের ১০ জেলায় এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সেগুলো হলো- মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

> রাজশাহী বিভাগের ৩ জেলায় বৈকালিক সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল এবং সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

> চট্টগ্রামের ৮ জেলায় প্রথম ধাপে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এগুলো হলো- ফেনি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এবং পেকুয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

> ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

> খুলনা বিভাগের ৪ জেলায় এই বৈকালিক সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় এই সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ এবং গংগাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

বরিশাল বিভাগের ৩ জেলায় এই সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল এবং চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় এই সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোপালগঞ্জ এবং বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

কোন চিকিৎসকের কতো ফি
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিসে অধ্যাপকের ফি (ভিজিট) হবে ৫০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক পাবেন ৪০০ টাকা। চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ হবে ৫০ টাকা।

সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালটেন্টের ফি হবে ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কলসালটেন্ট পাবেন ৩০০ টাকা, চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা আর সার্ভিস চার্জ কাটা হবে ৫০ টাকা।

সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট অথবা পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রিধারীর ফি হবে ৩০০ টাকা। এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক  পাবেন ২০০ টাকা, চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারী পাবেন ৫০ টাকা আর সার্ভিস চার্জ কাটা হবে ৫০ টাকা।

এছাড়া এমবিবিএস বা বিডিএস ও সমমানের চিকিৎসকদের ফি হবে ২০০ টাকা। এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পাবেন ১৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতাকারীর জন্য ২৫ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ২৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে।