রাজশাহীর বাজারে বিষাক্ত জেলি পুশ করা চিংড়ি, দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে চিংড়ির পেটে বিষাক্ত জেলি ঢুকিয়ে ওজন বাড়ানোর অভিযোগে দুই মাছ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মহানগরীর সাহেববাজার মাছপট্টিতে অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

অভিযানে চিংড়িতে বিষাক্ত জেলি পাওয়ায় মাছ বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম ও রিয়াদকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ।

রাজশাহীর মাছ বাজার জেলি পুশ করা চিংড়ি এখন দখল করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।

তিনি জানান, রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন মাছের বাজারে ওজন বাড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে বেশি টাকা আদায়ে চিংড়ির পেটের মধ্যে জেলি ঢুকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপরই মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর সাহেব বাজার এলাকার কাঁচা বাজারের মাছ পট্টিতে অভিযান শুরু করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এসময় মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ও রিয়াদের কাছে জেলি পুশ করা বিপুল পরিমাণ চিংড়ি পাওয়া যায়। তবে তারা একটি আড়ত থেকে জেলি পুশ করা চিংড়ি কিনেছেন বলে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। পরে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার করে টাকা জরিমানা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ আরও বলেন, ‘রাজশাহীতে জেলি পুশ করা চিংড়ির সন্ধান পেলাম এই প্রথম। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিরিঞ্জের মাধ্যমে চিংড়ির শরীরে জেলি পুশ করে। যা ক্রেতারাদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল। আগামীতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

পুশকৃত চিংড়ি বোঝার উপায় সম্পর্কে রাজশাহীর একজন মৎস্য কর্মকর্তা জানান, স্বাভাবিক চিংড়ির হাত-পা কুঁকড়ে থাকে, কিন্তু জেলি পুশকৃত চিংড়ির হাত-পা ছড়িয়ে থাকে। বাইরে থেকে পুশকৃত চিংড়ি দেখতে একটু মোটা হয়, চিংড়ির গায়ে একটা টনটন ভাব থাকে। এছাড়া চিংড়ির মাথা ভেঙে দেহের অংশে চাপ দিলে পুশকৃত চিংড়ি থেকে পানি বেরিয়ে আসে, জেলি পুশ করা চিংড়ি থেকে একটা পিচ্ছিল পদার্থ বেরিয়ে আসে। জেলি পুশ করা চিংড়ি খেলে লিভার, কিডনি ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি জানান।

রাজশাহীতে শীত মৌসুমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গলদা চিংড়ির চাহিদা বেড়েছে। আর এই সুযোগে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করে ওজন বাড়াচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।