রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পদ্মানদীতে নৌকাডুবির ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শনিবার  সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক সাংবাদিকেদের তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলামকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

এছাড়া তদন্ত কমিটিতে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিআইডব্লিউটি, পুলিশ নৌ-পুলিশ থেকে একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে ওই কমিটিতে। কমিটিকে দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক বলেন, নিহতদের স্বজনদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তারপর কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে প্রায় ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে দুইটি নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় শনিবার আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম রতন আলী (২২)। তিনি মহানগরের রাজপাড়া থানার বসুয়া এলাকার গাজী শেখের ছেলে। এছাড়া নিখোঁজ কনের দুলাভাই। শনিবার (৭ মার্চ) বিকেলে ৩টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

একই ঘটনায় শুক্রবার (৬ মার্চ) রাতে উদ্ধারের পর তার ছয় বছরের মেয়ে মরিয়ম খাতুনকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে শনিবার (৭ মার্চ) দুপুর সোয়া ১টার দিকে মহানগরের শ্রীরামপুর ঘাট সংলগ্ন পদ্মা নদী থেকে এখলাস হোসেন (২২) নামে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি পবা উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আসলাম হোসেনের ছেলে এবং নৌকাডুবিতে নিখোঁজ কনে সুইটি খাতুন পূর্ণিমার চাচাতো ভাই। এছাড়া এখলাস পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন।

এছাড়া দুপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যাওয়া নৌকাটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার সকালে রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর চারঘাট অংশের ইউসুফপুর থেকে মনি বেগম (৪৫) নামে আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নিখোঁজ কনের চাচি। এ নিয়ে পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো চারজনে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় পাঁচজন।

নিখোঁজদের খুঁজতে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে চারটি উদ্ধারকারী ইউনিট। এরমধ্যে রাজশাহী সদর ফয়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি রংপুর থেকে আসা একটি, বিআইডব্লিউটির একটি এবং বিজিবির একটি ইউনিট নদীতে কাজ করছে।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চলে। পরে মধ্যরাতে উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। শনিবার সকাল থেকে চারটি ইউনিট আবার উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। এরমধ্যে রাজশাহীর চারঘাটের ইউসুফপুর সীমান্তে পদ্মা নদী থেকে বোরকা পড়া অবস্থায় মধ্যবয়সী ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে বিজিবির টহল দল।