রাজশাহীর তমালের আঁকা স্কেচ দেখে অভিযুক্ত ধর্ষক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের বাইরে শিল্পীদের আঁকা স্কেচ দেখে অনেক অপরাধীকে সহজেই শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশে প্রথমবারের মতো আর্ট শিল্পীদের আঁকা স্কেচ ধরে অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা পুলিশ। আর আর্ট শিল্পী এই প্রথম কাজটি করেছেন রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকার ছেলে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন ওরফে সাখাওয়াত তমাল।

বর্তমানে পুরান ঢাকার অবস্থান করা সাখাওয়াত তমাল ফোনে বলেন, আমার পেশা মানুষের ছবি আঁকা। তাই ফেসবুকে পুলিশ প্রশাসনের সাথে যুক্ত থাকায় আমাকে একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পাঠানো হয়। এরপর আমি দুই-তিনটা স্কেচ করে তাদেরকে পাঠায়। এতে করে আমার আঁকা স্কেচের সহযোগিতায় আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।

ঢাকার বেসরকারি ইউডা থেকে চারুকলা বিভাগ থেকে পড়ালেখা করা এই আর্ট শিল্পী আরও জানান, শিল্পী হিসাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। পরবর্তীতে আমাদের এধরণের কাজের সহযোগিতা লাগলে আমরা এগিয়ে আসবো। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এধরণের কাজে আমাদের মতো চারুকলার শিল্পীরা সহযোগিতা করে থাকেন। তার দাবি, দেশে এধরণের কাজ প্রথম করা হলো।

এদিকে শনিবার (২ মে) দুপুরে ডিএমপির শ্যামপুর জোনের সহকারী কমিশনার শাহ আলম জানান, রাজধানীর কদমতলীতে ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় টুটুল (২০) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিল্পীর আঁকা স্কেচ দেখে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কদমতলীর মুরাদনগর এলাকার এক শিশুকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে মাস্ক পরা এক যুবকের ছবি সংগ্রহ করা হয়। সেই ছবি শিল্পীকে দিয়ে স্কেচ করিয়ে নেওয়া হয়। ওই স্কেচের ছবি প্রচার করে ধর্ষকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তার নাম টুটুল (২০)। মুগদায় বাবার সঙ্গে থাকে সে। কদমতলীতে খালার বাসা থাকায় প্রায়ই সে এই এলাকায় আসে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার রাতে কদমতলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় শিশুটিকে উদ্ধার করার পর তার বাবা কদমতলী থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মুরাদপুর এলাকায় ধর্ষণের স্থানটির আশেপাশের ১৬টি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক শিশুটিকে হাত ধরে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে। কিন্তু যুবকের মুখে মাস্ক পরা ছিল বলে তাকে তাৎক্ষণিক শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে সাখাওয়াত তমাল নামে এক শিল্পীকে দিয়ে সন্দেহভাজন যুবকের স্কেচ এঁকে নেয়া হয়। ওই স্কেচের একশ’ কপি পোস্টার বানানো হয়। পোস্টার এলাকায় টাঙানোর পর একজন ফোন করে ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করে।

কদমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান জানান, টুটুলকে রোববার (৩ মে) সকালে আদালতে পাঠানো হবে। সে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।