রাজশাহীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৮ দফা দাবি জানানো হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর উন্নয়নে ১৮ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রী বরাবর উপস্থাপন করবে রাজশাহীর সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। আগামী বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহীতে আগমন উপলক্ষে এসব দাবিনামা তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব দাবি তুলে ধরা হবে। এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক হবে বলেও নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব মো. লিয়াকত আলী। সভায় প্রধানমন্ত্রীতে স্বাগত জানিয়ে রাজশাহীর উন্নয়নে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান।

সভায় উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজশাহীর উন্নয়নে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও শিল্পকারখানায় গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করণ, নগরীর আবেদনকারীদের বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ স্থাপন, গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ প্রকল্প পূন: বিবেচনায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন, উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন, সিএনজি স্টেশন স্থাপন অন্যতম।

এছাড়া রাজশাহীর উন্নয়নে ১৮ দফার অন্য গুলো হলো, রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস ছাড়াও রাজশাহী থেকে চট্রগ্রাম সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু করন, আব্দুলপুর-রাজশাহী-রহনপুর ডুয়েল গেজ রেল লাইন নির্মাণ, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন, ভুখন্ড রক্ষায় স্থ’ায়ী নদী তীর প্রতিরক্ষা, কৃষিভিত্তিক ইপিজেড প্রতিষ্ঠা, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, নতুন করে নগরীর একাধিক মাধ্যমিক স্কুল সরকারি করন, ক্রিকেট টেষ্ট ভেন্যু স্থাপন, পদ্মা নদীর চরে সরকারি ভাবে অর্থনৈতিক জোন স্থাপন, আম, টমেটোসহ অন্যান্য ফল সংরক্ষণে কোল্ড ষ্টোরেজ স্থাপন এবং নারী শিল্পোদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ সহায়তার দাবি রয়েছে। এছাড়া চাঁপাইনবাগঞ্জের সঙ্গে রাজশাহীর নীবিড় যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি সাটল ট্রেনেরও দাবি করেন বক্তারা। এছাড়া রাজশাহীর পদ্মা নদীর ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীপথে পন্য সরবরাহ ব্যবস্থার দাবির কথাও উল্লেখ করেন রাজশাহী রক্ষা সংড়গ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান রাজশাহীর উন্নয়নে এসব বিষষ বাস্তবায়নের দাবি করে বলেন, রাজশাহী জেলার দক্ষিন-পূর্ব পাশ ঘেষে পদ্মানদী প্রায় ৭০ কিমি দৈর্ঘ্যে বিস্তৃত। কৃষিভিত্তিক উত্তরাঞ্চলের মানুষ পানির বড়ই কষ্টে আছে। ভূ-উপরিস্থিত পানির ব্যবহার ছাড়া বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি বিপ্লব ও এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে ভূমিধ্বস ও জলবায়ূ বিরূপ প্রভাবসহ পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। ফলে এর মাশুল দিতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।

সভায় রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, এসব দাবিতে রাজশাহীর মানুষকে সংঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। আপনাকেও (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) একাধিকবার স্মারকলিপির মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে। তবে বছরের পর বছর ধরে নানা আশ^াস থাকলেও দাবিগুলো পূরণ হচ্ছে না। একারণে রাজশাহীবাসী অনেকটায় হতাশ। এরই মধ্যে আপনি রাজশাহীতে আসছেন। আপনার রাজশাহী আগমনে আমার আবার নতুন করে আশায় বুক বেধেছি। আপনার উন্নয়ন বার্তা শুনতে রাজশাহীবাসী অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, সহসভাপতি আলহাজ্ব হারুনার রশিদ, কল্পনা রায়, এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, এ্যাডভোকেট অঙ্কুর সেন, সেলিনা বেগম, মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, সমাজ সেবক নিযাম উদ্দিন, শাহীনা বেগম, সাগরিকা বেগম, রাশেদা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, বজলে রেজবি আলম হাসান মুঞ্জিল, নুরুল হক, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

স/অ