শনিবার , ১৩ আগস্ট ২০১৬ | ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে শ্রমিক নেতা মাহতাবের তান্ডবে ৬ বছর ধরে এলাকা ছাড়া অধ্যাপক হান্নানের পরিবার

Paris
আগস্ট ১৩, ২০১৬ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: 

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেনের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে রাজশাহী মহানগরীর প্রফেসর হান্নান পরিবার ৬ বছর ধরে এলাকা ছাড়া রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার টিকাপাড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে স্বপ্না (২৮) এর বাড়িতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ২০১২ সালের ২৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাহতাব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠি, লোহার রড, হাসুয়াসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে আসবাবপত্রসহ সবকিছু ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।                                                                     file -1

এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নিভানো হয়। আগুনে কয়েক হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সময় স্বপ্নার বাবা কুদ্দুসকে মাহতাব ও তার বাহিনী বাড়ী থেকে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে কালু মিস্ত্রীর মোড় তপুর পুকুর পাড়ের রাস্তায় ফেলে বেধড়ত মারপিট ও হাসুয়া দিয়ে জখম করে। এতে কুদ্দুস অজ্ঞান হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেরে রেখে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ৫৬। মামলার পর মাহতাব বাহিনী মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। যে মামলাটি এখন রাজশাহীর আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

 

মামলার পর পুলিশ মাহতাবকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে আদালতে সোপর্দ না করে চার্জসিট না দেওয়ায় তৎকালীন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর গত ২০১৩ সালের জুন মাসের ৩ তারিখে একটি অভিযোগ প্রদান করেন কুদ্দুসের মেয়ে স্বপ্না।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই মামলায় শ্রমিক নেতা মাহতাবকে আসামী করায় মাহতাবের সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাহতাব তাদের মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধামকি দিত। তার কথা মত মামলা তুলে না নিলে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদীকে থানায় ডেকে নিয়ে এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও চাপ দেয় এবং জোর করে কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে।

 

সই না করতে চাইলে মাহতাবের পক্ষ হয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ভয়-ভীতি দেখিয়ে বলেন, আপনি মেয়ে মানুষ রাস্তায় একা চলাফেরা করেন সন্ত্রাসীরা এসিড নিক্ষেপ করতে পারে। পুলিশের কথায় রাজি না হলে মামলার আলামত নষ্ট করা হবে বলে হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত মামলাটি গোয়েন্দা বিভাগে হস্তান্তরের পর মাহতাব বাহিনীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল হয়। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।                                                               file -2

প্রফেসর আব্দুল হান্নান ও তার ছোট ভাই আযম অভিযোগ করে  জানান, সন্ত্রাসী মাহতাব কোন কিছু করেই মামলা থেকে নিজের নাম না কাটাতে পেরে তাদের পরিবারের উপর শুরু অকথ্য নির্যাতন। রাস্তা-ঘাটে এমনকি মাহতাব সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে মেয়ে মানুষ ও ছোটদের উপর নির্যাতন শুরু করে। এরপর দলীয় ও শ্রমিক নেতার প্রভাব খাটিয়ে মাহতাব গত ছয় বছরে প্রফেসর হান্নান পরিবারের উপর রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন থানায় নাশকতাসহ বিভিন্ন ধরণের পৃথক ২৪ টি মামলা দায়ের করে তাদের আসামী করে।

 

মামলায় বাদ পড়েনি হান্নান পরিবারের ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ। মিথ্যে ২৪টি মামলার বোঝা নিয়ে পরিবারের লোকজন একত্রে থাকতে না পেরে এলাকা থেকে একে একে পালিয়ে যেতে শুরু করে পরিবারের সবাই। তারপর আর এলাকায় ফেরা হয়নি তাদের। বর্তমানে হান্নান নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্য এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। এত বছরেও মাহতাবের জুলুম থেকে মুক্তি পায়নি হান্নান পরিবার। তাদের সময়ে অসময়ে দেয়া হচ্ছে হুমকি। এর কারণে তারা এলাকায় ফিরে আসতে চাইলেও প্রাণ ভয়ে ফিরতে পারছেননা।

 

প্রফেসর হান্নান ও তার ছোট আযম কাছে মাহতাবের অকথ্য জুলুম নির্যাতনের ঘটনার বিবরণ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করেও কোন সুফল পাননি তারা। এর কারণ হচ্ছে মাহতাব শ্রমিক নেতা ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে দাবিয়ে রাখেন এমনই অভিযোগ করছেন তারা।

 

তারা আরো বলেন, যদি প্রশাসন তাদের কথা না শুনত তাহলে এতদিন তাদের নিজ এলাকা ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হতোনা। সুবিচার পেতেন তারা বলেই আবারও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অসহায় পরিবারটি খবর ২৪ঘণ্টার মাধ্যমে সরাৃকারের কাছে সুষ্ঠ বিচার ও মাহতাবের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

স/অ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর