রাজশাহীতে শেষ মহুর্তে মাঝারি গরুতে জমে উঠেছে কোরবানির পশুহাট


নিজস্ব প্রতিবেদক:

শেষ সময়ে জমেছে কোরবানির পশুহাট। রাজশাহীতে পশুহাটগুলো জমেছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষিতে। এদিন কোরবানির জন্য পছন্দের পশু কিনেছেন অনেকেই। বাড়ি ফেরা মানুষদের মধ্যে যারা কোরবানি দিচ্ছেন তাদের উপস্থিতি ছিল হাটে। ফলে হাটজুড়ে কোরবানি পশু ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল।

হাটে দুপুরের পর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতিতে দর-কষাকষির মধ্যে চলে গরু-ছাগল বেচাকেনা। বিক্রেতারা বলছেন, দেশি গরুর চাহিদা বেশি। নিজেদের সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা পছন্দের পশু কিনছেন। তবে তুলনামূলক ক্রেতা কম ছাগলের হাটে। তার পরেও মোটামোটি বিক্রি হয়েছে ছাগল।

রাজশাহী সিটি হাট ও কাটাখালী পশুহাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু ছিল। সেই সঙ্গে ক্রেতা বিক্রেতা বেশি ছিল। বিক্রেতারা দাম মোটামোটি বললেও ক্রেতারা বলছেন, আগের হাটগুলোর তুলনায় এই হাটে কোরবানির পশুর মধ্যে গরুর দাম বেশি।

কাটাখালিতে হাটের আশে-পাশের এলাকায় বাড়িতে পোষা গরু ও ছাগলগুলো নিয়ে এই হাটে এসেছেন অনেকেই। এই হাটে দেশি জাতের ছোট আকারের গরু বেশি ছিল। ছোট গরু হওয়ায় দাম নাগালের মধ্যে ছিল ক্রেতাদের। হাটে আকার ভেদে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরু বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গরু বিক্রেতা রমজান আলী জানান, ‘এই গরু এক লাখ ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। বাড়িতে গত সপ্তায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দাম বলেছিল। বেশি দামের আশায় গরু বিক্রি করিনি। তিনদিন আগে বাড়িতে ৯৮ হাজার টাকা দাম বলেছিল, তাকে দেয়নি। আমার টার্গেট ছিল এক লাখ ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। কিন্তু হলো না। দিয়ে দিলাম। বাড়িতে রাখলেই বেশি খরচ।’
ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘৯৬ হাজার টাকায় কোরবানির গরু কিনেছি। গরুর মালিকের বাড়ি শ্যামপুরে। তারা শনিবার সকাল পর্যন্ত তাদের বাড়িতে রাখবে। ইদের দিন ভোরে আমাদের নিয়ে আসতে হবে।

একই হাটের উত্তরে বসেছে ছাগলের হাট। হাটে ১০ থেকে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দামে ছাগল উঠেছে। হাটে ছাগলও মোটামোটি বিক্রি হয়েছে। ছাগল বিক্রেতা ইয়াসিন আলী জানান, ‘হাটে খাসির দাম মোটামুটি। আমার ছোট ভাইয়ের খাসি গত হাটে ২২ হাজার ৫০০ টাকা দাম বলেছিল। আমরা দেয়নি। দুপুরে হাটে ২০ হাজার টাকা একজন দাম বলেছিল। তার পরে আর কেউ দাম বলেনি।’

ছাগল ক্রেতা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘ছোট ছাগলগুলো তুলনামূলক দাম বেশি। তবে বড় ছাগলগুলোর দাম কমই মনে হচ্ছে। ২৮ হাজার টাকায় দুইটি ছাগল কিনেছি। একটি কোরবানি দেব। অপরটি আগামি কোরবানির জন্য বাড়িতে লালনপালন করবো।’

অন্যদিকে, জুম্মার নামাজের পর জমে উঠে রাজশাহীর সিটি পশুহাটের কেনাবেচা। এদিন হাটে প্রচুর কোরবানির পশু উঠেছে। বিক্রিও ভাল হয়েছে। এরমধ্যে দেশি ষাড় গরু বেশি কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। হাটে তুলনামূলক বেশি বিক্রি হচ্ছে মাঝারি আকারের গরুগুলো। বিক্রির দিক থেকে দ্বিতীয়তে রয়েছে ছোট আকারের গরু। কারণ অনেকেই একটি করে গরু কোরবানি দেন। তবে বড় মাঝারি গরুর চেয়ে ছোট আকারের গরুর দাম একটু বেশি ছিল হাটে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ইদের ছুটি হয়ে গেছে। তাই অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। তারা কোরবানির পশু কিনতে হাটে এসেছেন। তাই তুলনামূলক বেশি মানুষের সমাগম ঘটেছে হাটে। যারা একটি গরু সাত ভাগায় কোরবানি দেবেন তারা বড় গরুগুলো পছন্দ করছেন। বড় আকারের গরুগুলো আড়াই লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ ও তার বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে।

সিটিহাটে সোহরাব হোসেনেরা দুই লাখ ৭৮ হাজার টাকায় একটি লাল রঙের গরু কিনেছেন। একটু কষ্ট হলেও তারা গরুটি বাড়িতে নিয়ে যাবেন। কারণ একদিন তারা কোরবানির গরুটি বাড়িতে রেখে খাওয়াতে চান।

সোহরাব জানান, ‘এতো বড় গরু সামলাতে সমস্যা হবে। তবুও বাড়িতে নিয়ে যাব। কারণ গরুর মালিকের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান জানান, হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। কেনাবেচা ভালাই হচ্ছে।

এস/আই