রাজশাহীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরমে, জনজীবনে ভোগান্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগর এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী। যখন-তখন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় দৈনন্দিন কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে তাদের। একটি কাজের পেছনে প্রায়ই অতিরিক্ত সময় নষ্ট হচ্ছে। তীব্র গরমের মধ্যেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার ও শনিবার পর পর দুইদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, দেবিশিংপাড়া, তালাইমারী, বালিয়াপুকুর, মঠপুকুর ও শিরোইল এলাকায় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিলো না। ওই দুইদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজলা বটতলা, জাহাজঘাট, ধরমপুর ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলো না।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪ এর আওতাধীন সব এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলো না। সেদিন রাস্তার পাশের গাছের ডালপালা কাটা হয়। আগের দিন শুক্রবার সিপাইপাড়া, লক্ষ্মীপুর ও সিঅ্যান্ডবি এলাকায় সকাল ৮টা থেকে ৯টা, কলাবাগান, হেতেমখাঁ এলাকায় ৯টা থেকে ১০টা, শিরোইল, কাদিরগঞ্জ, বর্ণালী মোড় এলাকায় সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা, কুমারপাড়া, ফুদকিপাড়া ও আলুপট্টি এলাকায় সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়।

নগরবাসী জানান, দিনরাত সব সময় বিদ্যুতের বিভ্রাট হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে এক ঘণ্টার আগে আসছে না। দিনে তো বটেই, রাতেও কয়েকবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসব বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে কোনরকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই। এ ছাড়া আগের দিন মাইকিং করেও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

নেসকো সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী শহরে আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিলিয়ে নেসকোর গ্রাহক সংখ্যা ২ লাখ ২৩ হাজার। সড়ক বিভাগ বিভিন্ন স্থানে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করছে। ফলে বৈদ্যুতিক খুঁটি তুলে সরাতে হচ্ছে। এ কারণে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ ছাড়া নগরবাসী অপরিকল্পিতভাবে এসি, রাইস কুকার ব্যবহার করছেন। ফলে বাড়তি চাপ পড়ছে ট্রান্সফরমারের ওপর। এতে লাইন ফল্ট করছে। তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসব ট্রান্সফরমারের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের।

নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার ফটোকপি ও কম্পিউটার কম্পোজের দোকানি তুহিন হোসেন বলেন, করোনার ভেতর লকডাউনে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ রেখেছি। এখন দোকানপাট খুলতে পারলেও বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানে কাস্টমার এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে চলে যাচ্ছে। এতে ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারছি না।

বিদ্যুতের এমন বিভ্রাট নিয়ে নেসকোর রাজশাহী বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশীদ বলেন, রাজশাহী শহরে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ৮৭ থেকে ৯০ মেগাওয়াট। কিছুদিন আগে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকত। তখন লোডশেডিং হতো। কিন্তু এখন চাহিদার সবটুকু বিদ্যুতই জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে সংস্কার কাজের জন্য। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হলে আগের দিনই এলাকায় মাইকিং করা হয় বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

স/আ২