রাজশাহীতে পদ্মার চরে এবার পুকুর!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পদ্মার চর দখল করে নানা স্থাপনা গড়ে ওঠার খবর উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। এবার পদ্মার চরে রীতিমতো পুকুর গড়ে তুলেছেন প্রভাবশালীরা। গত প্রায় এক মাস আগে এই পুকুরটি গড়ে তোলা হয়েছে রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায়। একেবারে মাঝ চরেই চর কেটে চারিদিকি পাড় তুলে এই পুকুরটি করা হেয়ছে। পুকুরের চারিদিকে বাঁশের বেড়াও দেওয়া হয়েছে। যাতে জনসাধারণ প্রবেশ করতে না পরে। পাশাপাশি পুকুরের মাছ পাহারা দেওয়ার জন্য একটি টিনের ঘরও নির্মাণ করা হয়েছে পাড়ে।
তবে পুকুর মালিকদের দাবি, জমিটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এ কারণে সেখানে তারা সেখানে পুকুর খনন করেছেন।

অন্যদিকে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মার পাড়ের নিচ থেকে নদীর জমি। তবে পাড়ের নিচের জমিগুলো খাস খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত। ব্যক্তিগত সম্পত্তি হলেও পদ্মার ভিতরে গেলেই সেটি খাসে পরিণত হবে। তার পরেও কিভাবে জেগে ওঠা চরের জমিতে পুকুর খনন হলো, সেটি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’


সরেজমিন গতকাল শনিবার ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে দক্ষিণ পাশে পদ্মা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরে একটি নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে। ওই পুকুরের চারিদিকে পাড় তুলে মাঝখানে মাটি কেটে পুকুরটি করা হয়েছে। পুকুর মালিক ডলার হোসেন গত মাস খানেক আগে পুকুরটি খনন করেছেন জেগে ওঠা চর দখল করে। তবে গত তিন-চারদিন আগে পুকুরটি তথ্য আসে কালের কণ্ঠের কাছে। এরপর সরেজমিন গিয়ে সেই পুকুরের অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে পদ্মার চরে ঘুরতে আসা আলী এহসান নামের এক যুবক বলেন, ‘নদী দখল করে এর আগে নানা স্থাপনা গড়ে ওঠেছে। কিন্তু এভাবে চর দখল করে পুকুর গড়ে তোলার দৃশ্য কখনো চোখে পড়েনি। এবারও দেখলাম চরের মধ্যেও প্রভাবশালীদের থাবায় গড়ে উঠেছে পুকুর। এতে নদীর সৌন্দর্য নষ্ট যেমন হবে, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানির গতিপথও হয়তো পরিবর্তন হবে।’

জানতে চাইলে রাজশাহী রক্ষ সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘পদ্মার চরে যে স্থাপনাই গড়ে উঠুক না কেন, সেটি অবৈধ হবে। কারণ নদীতে যে জমি চলে যায়, সেটি আর ব্যক্তি মালিকানায় থাকে না। সেটি হয়ে যায় সরকারি সম্পত্তি। আর সরকারি সম্পত্তিতে ব্যক্তিমালিকাধীন পুকুর গড়ে ওঠে কিভাবে?’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘পদ্মার চরে কাউকে পুকুর খননের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তার পরেও চর দখল করে কারা এই পুকুর খনন করলো সেটি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স/আর