তৃতীয় দিনের পরিবহন ধর্মঘট

রাজশাহীতে পথে পথে দুর্ভোগ যাত্রীদের, উপচে পড়া ভিড় রেল স্টেশনে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।  এছাড়া ধর্মঘটে পণ্য পরিবহণ ব্যাহত হওয়ায় প্রভাব পড়েছে কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেরও।

এদিকে, টানা তিনদিন রাজশাহী থেকে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সকল জেলা ও বিভাগীয় শহরে কোনো বাস চলাচল করছে না। এছাড়া পণ্যবাহী ট্রাক-কভার্ডভ্যানও চলছেন না। সব মিলিয়ে রাজশাহীর সঙ্গে সড়ক পথে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শহর, জেলা ও উপজেলার সড়কে বেড়েছে জ্বালানি বিহীন যানবাহনের চলাচল। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দখলে চলে গেছে পুরো রাজশাহী। গন্তব্যে পৌঁছাতে ইচ্ছেমত ভাড়া হাঁকছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।  রাজশাহীতে পথে পথে কিংবা বিভিন্ন বাস কাউন্টারে দেখা গেছে যাত্রীদের দুর্ভোগ।

আবার ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করেও সামলানো যাচ্ছে না যাত্রীদের চাপ। বগির ভেতর ঠাসাঠাসি ও ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন । করোনার কারণে দাঁড়ানোর টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকায় ট্রেনের টিটিদের কাছে জরিমানা দিয়ে টিকেট কেটে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। শিশু সন্তানদের কোলে নিয়ে ট্রেনে দাঁড়িয়ে অনেক মায়েরা রওয়ানা দিচ্ছেন গন্তব্যে। এর ওপর রোববার সকালে সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি।

শিরোইল বাসস্ট্যান্ডে আসা যাত্রী আরিফুল আলম জানান, তিনি সরকারি চাকরিজীবী। পারিবারিক কারণে সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে একদিনের বেশি ছুটি নিয়ে রাজশাহী আসেন। এরপর পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রাজশাহীতেই আটকা পড়েন। বাস বন্ধ। ট্রেনের টিকিটও পাননি। তাই এক হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। মাইক্রোবাসে অন্য যারা যাচ্ছেন তাদের প্রায় একই অবস্থা।

সাইফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী জানান, সাধারণ সময়ে রাজশাহী থেকে পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাসের ভাড়া ৭০ টাকা। কিন্তু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ১১০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন অটোরিকশা চালকরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী দুই শতাধিক ট্রাক আটকে পড়ায় রাজশাহীর বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ, শীতকালীন সব্জিসহ নিত্যপ্রয়োজনিয় দ্রব্যের দাম।

রাজশাহী বাসশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব উদ্দিন বলেন,শুধু ডিজেল নয়, ফেরি ভাড়া, ব্রিজের টোল-ট্যাক্স বৃদ্ধি করে পরিবহণ সেক্টরের বেহাল অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে।একটা সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত রাখবেন। তৃতীয়দিনের মতো পরিবহণ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। একই অবস্থা রাজশাহী বিভাগের সকল জেলায় বিরাজমান।

স/অ