রাজশাহীতে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে অপহরণ-অর্থ আদায় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে রাজশাহী কোর্ট কলেজের এক ছাত্রকে অপহরণ, প্রাণনাশের হুমকি ও পুলিশ পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের অপরাধে প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ৩ হাজার দুইশত টাকা, ২ টি মোবাইল ফোন, ২ টি জিআই পাইপ, ১ টি চাকু, পুলিশের ওয়াকিটকির মতো দেখতে একটি ছোট কালো রংয়ের ওয়াকিটকি, পুলিশ লেখা ও পুলিশের মনোগ্রাম সম্বলিত ২টি আইডি কার্ড হোল্ডার এবং সাদা-নীল রংয়ের পুলিশ লেখা সম্বলিত এক জোড়া জুতা উদ্ধার হয়। গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) মহানগরীর রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়া ডাবতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো- রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার হাদির মোড় বৌ বাজারের মৃত আলম শেখের ছেলে মো. মাসুম শেখ (৩৮), রামচন্দ্রপুর মিরেরচকের মো. সেলিম আলীর ছেলে মো. আশিক আলী (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. মুনতাসির আলী সিয়াম (২৯), কেদুর মোড় বৌ বাজারের মৃত সামসুলের ছেলে মো. পলাশ (২৭) এবং রাজশাহী জেলার চারঘাট থানার হলিদাগাছী, খুদির বটতলার মো. মামুনুর রহমান বাবুর স্ত্রী মোসা. শরিফা আক্তার সাথী (২৭)। সে নগরীর রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়া, ডাবতলার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দীক বলেন, পলাশ (ছদ্মনাম) রাজশাহী কোর্ট কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র। সে লেখপড়ার পাশাপাশি ইউনিলিভার পিয়রইট কোম্পানী রাজশাহী শাখায় চাকুরী করে। বাসাভাড়া নেওয়ার জন্য সে রাজশাহী বাসা ভাড়া নামক একটি ফেসবুক পেইজে পোস্ট দেয়। আসামী শরিফা আক্তার সাথী পলাশকে ফোন দিয়ে বলে, রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের পাশে তার মায়ের বাসায় একরুম বিশিষ্ট একটি ভালো রুম আছে। পলাশের এক রুমের বাসা প্রয়োজন ছিল। তাই সে সরল বিশ্বাসে গত ১৩ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২ টায় রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে আসামি শরিফাকে ফোন দেয়। ফোন পেয়ে শরিফা এসে পলাশকে কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম পূর্বপাড়ায় একটি বাড়ির নীচতলার একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে বাসার চারপাশ দেখার সময় শরিফা কৌশলে রুমের দরজা আটকিয়ে দিয়ে পলাশকে জড়িয়ে ধরে। সেখানে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের ৪ জন সদস্য রুমের মধ্যে প্রবেশ করে। তারা শরিফার সাথে পলাশের আপত্তিকর অবস্থার ছবি তোলে। এরপর পলাশকে চড়থাপ্পড়, হুমকি, ফেসবুকে ছবি ছেড়ে দেওয়ার-সহ পুলিশ পরিচয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে তার কাছ থাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৪ হাজার ৯০০ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

তিনি আরও জানান, এরপর পলাশ ডিবি পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের অবস্থান নির্ণয় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উচ্চতর একটি টিম তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান নগর পুলিশ কমিশনার।

এএইচ/এস