রাজশাহীতে দ্বিগুন ব্যবসা বেড়েছে শেয়ারবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক:


মনির হোসেন। রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা। একসময় প্রায় প্রতিদিন শেয়ারবাজারের খোঁজ-খবর নিতে ব্রোকারেজ হাউজ নগরীর আলুপট্টিতে যেতেন। কিন্তু অব্যাহত লোকসানের কারণে মূলধন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে তাঁর। একসময় ব্রোকারেজ হাউজে যাওয়ায় ছেড়ে দেন তিনি। তারপরও কিছু টাকা ফেলে রেখেছিলেন ভবিশ্যতের আশায়। যদি কখনো বাড়ে শেয়ারবাজার। অবশেষে সেই আশা অনেকটায় তার বাস্তবে রুপ দিতে থাকে। ফলে লকডাউন পরবর্তি সময়ে শেয়ারররবাজার চাঙ্গা হতে দেখে প্রায় ৭ বছর পরে আবারো নিয়মিত ব্রোকারেজ হাউজে যাতায়াত করছেন মনির হোসেন।

তিনি বলেন, প্রায় সাত বছর তেমন যায়নি আইসিবিতে। মাঝে মাঝে খোঁজ নিতাম বাসায় বসে থেকে। কিন্তু লকডাউনের পর শেয়ার বাজার চাঙ্গা দেখে এখন নিয়মিতই যাচ্ছি। প্রতিদিন শেয়ার কেনা-বেঁচাও করছি। এই অবস্থা চলতে থাকলে আবার শেয়ারবাজারে মানুষ ফিরে আসবে। মানুষ ব্যবসা করে সাচ্ছন্দবোধ করবে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে যখনোই বাজার হারাতে থাকি, তখন মূলধন তো হারায় সেইসঙ্গে মানসসিকভাবেও ভেঙ্গে পড়ি।’

আব্দুস সবুর নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যবসায় লাভ-লোকসান আছে। তাই বলে দিনেরর পর দিন যদি আপনি লোকসান গুনতে থাকেন, তাহলে সবই হারাতে থাকবেন। শেয়ারবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করে এমন পরিণতি হয়েছে অধিকাংশের। তবে আশার কথা হলো এখন আবার বাজার আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। একদিন কোনো কম্পানীতে লোকসান হলেও আরেক কম্পানীতে সেটি হয়তো পুশিয়ে যাচ্ছে। দিনশেষে মূলধন হারানোর ভয় গত প্রায় দুই মাস ধরে থাকছে না। এটিই বড় আশার কথা।’

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি এলাকায় শেয়াবাজারের ব্রোকারেজ হাউজে গিয়ে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের পদচারণায় যেন মুখোরিত হয়ে আছে এই ভবনের ৫ তলার ফ্লোরটি। জনাত্রিশেক ব্যবসায়ী অধিরর আগ্রহে নজর রাখছেন শেয়ারবাজারের দর দিকে। আবার কেউ কেউ কাউন্টারে গিয়ে শেয়ার কেনা-বেচাতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যবসয়ীদের পদচারণায় সামাজিক দূরুত্বও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জানতে চাইলে রাজশাহীর আইসিবির ম্যানেজার ইফতেখার খান বলেন, ‘এখন গড়ে অন্তত ৪০-৫০ জন ব্যবসায়ী আসছেন প্রতিদিন। কিন্তু লকডাউনের আগেও এতোসংখ্যাক ব্যবসায়ীর ভিড় ছিলো না। তখন গড়ে ১০-১৫ জন আসতেন। আর ললকডাউনের সময় গড়ে আসতেন বড় জোর ৫-১০ জন। কিন্ত এখন ৫০ জনও আসছেন কোনো কোনো দিন। শেয়ারবাজারের পজিটিভ পরিবতর্নের কারণে এমন ভিড় বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।’

তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে ঢাকার পরেই আমাদের রাজশাহীর অবস্থান। এখন শেয়াবাজারের চাঙ্গা পরিস্থিতিতেও রাজশাহী অবস্থান রয়েছে দ্বিতীয়। এখানে গড়ে প্রায় একশ কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে এখন। যা শেয়ার ব্যবসায়ীদের আশার আলো দেখাচ্ছে। ফলে আগে যদি ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হতো, এখন সেখানে হচ্ছে একশ কোটি। দ্বিগুন বেড়েছে করোনা পরবর্তিকালীন শেয়ারবাজার ব্যবসা।’

স/আর