রাজশাহীর তেরোখাদিয়ায় মার্কেট ফাঁকা, বাইরে অবৈধ দোকানে চলছে চাঁদাবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায় ড্রেনের ওপর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ২০১২ সালে নির্মাণ করা হয় একটি মার্কেট। যে মার্কেটটির নাম দেওয়া হয় কাঁচাবাজার। ছোট আকারের সব মিলিয়ে ৬৫টি দোকান রয়েছে এ বাজারে। মার্কেটটি নির্মাণের পর ২০১৫ সালে সেই দোকানগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই মার্কেটটির দখল বুঝিয়ে দিতে পারেনি সিটি করপোরেশন।

মার্কেটের সামনেই ফুটপাতের ওপর প্রতিদিন বসছে শতাধিক দোকান। হাঁস-মুরগি, সবজি ও মুদির দোকানগুলো থেকে প্রতিদিন একটি চক্র উত্তোলন করছে চাঁদা। এমনকি কোনো কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জামানতও নিয়ে রেখেছে তারা। ফলে দোকান বরাদ্দ নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তারা না পারছে দোকানের ভাড়া আদায় করতে, না পারছে নিজেরা ব্যবসা করতে।

অভিযোগ উঠেছে, সমস্যা সমাধানে এসব মানুষ বারবার রাসিকের মেয়রসহ কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছে; কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। তাদের দোকানগুলো বরাদ্দ দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রাসিক। এ নিয়ে দোকান বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, মার্কেটের নিচে ফুটপাতে বা রাস্তার ওপর দোকান বসালেও স্থানীয় একটি চক্রকে অর্থ দিতে হয়। প্রতিদিনই তারা দোকানপ্রতি ৩০-৫০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে। এই চক্রের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় মানিক হোসেন, রাজীব হোসেন ও নাজমুল। তাঁদের লোকজন বা তাঁরা নিজেরাও কখনো কখনো গিয়ে দোকানিদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জামানত হিসেবেও আদায় করেছেন ২০-৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব ব্যক্তিই সাধারণ কাঁচাবাজার মার্কেটের ভেতর ব্যবসায়ীদের বসতে বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন নানা কৌশলে। তাঁদের প্রশ্রয়ে বাইরে দোকানপাট বসছে। এতে মার্কেটের ভেতর পড়ে থাকছে ফাঁকা।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় মানিক দাবি করেন, ‘ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ সমিতি করেন। সেই সমিতিতে চাঁদা দেন। আমরা কারো কাছে থেকে দোকানের চাঁদা উত্তোলন করি না। কেউ বলতেও পারবে না।’

কাঁচাবাজার মার্কেট কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা একেকজন কমপক্ষে তিন লাখ টাকা খরচ করে প্রতিটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছি। কিন্তু ভেতরে ব্যবসার সুযোগ করে না দেওয়ায় বা আমাদের মার্কেটটি ঠিকমতো বুঝিয়ে না দেওয়ায় কোনো ব্যবসায়ী সেখানে বসতে পারছে না। ফলে টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিয়ে এখন অনেকেই পড়েছে বিপাকে।’

মার্কেটের সহসভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মার্কেটের ভেতর ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে বারবার রাসিকের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমসহ বিভিন্ন দপ্তরে হন্যে হয়ে ঘুরেছি। লিখিত অভিযোগ করেছি; কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, ‘ওই মার্কেটটির ভেতর ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি; কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।

স/আর