শীতে কাঁপছে রাজশাহী, বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘এতো ঠান্ডা ল্যাগছে, কি যে করি। ঘরেও থ্যাকতে প্যারছি না। আবার বাহিরেও বাতাসের অত্যাচার বের হতে প্যারছি না। শ্যাষ সুময়ে অ্যাসে ঠ্যান্ডা যে কাহিল করে দিলো। এই ঠান্ডাতে কাজ করতেও মুন চ্যাচ্ছে না। আবার কাজ না করলে খ্যাতে দিবে ক্যাডা। তাই কষ্ট হলেও কাজ করতে বাহিরে আইছি।’ গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী নগরীর রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে বসে থাকা জমির উদ্দিন এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন। তিনি যখন এই প্রতিবেদককে কথাগুলো বলছিলেন, তখন শীত আর হু হু ঠান্ডা বাতাসে অনেকটা ঠক ঠক করে যেন কাঁপছিলেন। তাঁর বাড়ি চারঘাটের নন্দনগাছী এলাকা।

প্রতিদিনের মতো গতকালও তীব্র ঠান্ডার মধ্যে সকাল ছয়টার মধ্যে বাসা থেকে বের হয়ে বাইসাইকেল নিয়ে উপস্থিত হন রাজশাহী নগরীর রেলগেট এলাকায়। এরপর অপেক্ষা করতে থাকেন কাজের সন্ধানে। তার মতো তীব্র শীত উপেক্ষা করে আরও অন্তত শ খানেক শ্রমিক ঠান্ডায় জুবুথুবু হয়ে বসেছিলেন ওই এলাকায় কাজের সন্ধানে।

এদিকে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্র মতে, আজ রাজশাহীতে বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ শনিবার ছিলো ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে রাজশাহীতে তীব্র শীত গতকাল সকাল থেকেই অনেক দিনমজুর ও খেটে খাওয়া ও বস্তি এলাকার মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘এত ঠান্ডা, তাও কেউ একটা গরম কাপড়ও দেয় না। সরকার দলের লোকেরাই কম্বল নিয়ে যায় বাড়িতে। তারা বিছানাই ফেলে। আর আমরা কষ্ট করি ঠান্ডায়।’


অন্যদিকে রাজশাহীতে শনিবার সন্ধ্যার পর বছরের সর্বোচ্চ শীত অনুভূত হতে থাকে। এরপর গতকাল রবিবার সকালে সেটি কয়েকগুন বেড়ে যায়। শীতে একেবারে প্রয়োজন ছাড়া গতকাল সকালে অনেকেই ঘর ছেড়ে বের হননি। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষরা ঘরে বসে না থাকতে পারায় তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না। তাঁরা কাজের সন্ধানে বের হয়ে তীব্র শীতের মধ্যে কাঁপতে থাকেন থর থর। ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষরা শীতে চরম বিপাকে পড়েছেন।

রাজশাহী নগরীর ছোট বনগ্রাম বস্তির বাসিন্দা ছালমা খাতুন বলেন, ‘শীতে আমরা খুব কষ্টে আছি বাপ। কিন্তু এখুনো কেউ কুনো কাপুড় লিয়ে অ্যালো না। ছিঁড়া কাপুড়-চুপুড় যা আছে-ওই দিয়্যাই কুনমতে দিন পার করছি।’