রাজশাহীতে আগে-ভাগেই প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রচারণা শুরু হবে। কিন্তু এই নিয়ম মানছেন না রাজশাহীর প্রার্থীরা। কোনো কোনো প্রার্থী রীতিমতো গণসংযোগেও নেমে গেছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে। আবার কেউ কেউ ফেসবুকে নিজের দলীয় প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রচারণা শুরুর আগেই এমন অগ্রিম প্রচারণা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল বলে মনে করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী-৫ আসনের এমপি প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মনসুর রহমান উপজেলার পালি বাজারে গণসংযোগ করে নৌকার ভোট প্রার্থনা করেন। এর আগের দিন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ও মহাজোটের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা রাবি শিক্ষকদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। গত ২৭ নভেম্বর রাজশাহী-১ আসেনর এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকার শিক্ষক নেতাদের নিয়ে নিজ বাড়িতে মতবিনিময় করেন। রাজশাহী-৩ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েন উদ্দিনের হরিয়ানে গণসংযোগ চালানো হয়।

রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে গত ২৯ নভেম্বর পৌর কার্যালয়ে মতবিনিময় করেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। নির্বাচনী এসব আয়োজনের পরে নেতাকর্মী এবং প্রার্থীরা কেউ কেউ নিজেদের ফেসবুকের মাধ্যমেও প্রচারণা চালান।

এদিকে রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হককে নৌকায় ভোট দেওয়ার দাবি জানিয়ে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে আগাম গান প্রচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে বাগমারার অন্য প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বাগমারা বিএনপির প্রার্থী আবু হেনা দাবি করেন, প্রচারণার আগেই এভাবে সরকার দলের এমপি প্রার্থীরা প্রচার চালাতে থাকলে নির্বাচনে সমান সুযোগ তৈরী হবে না। প্রার্থীদের সঙ্গে বৈশম্য তৈরী হবে। আগাম প্রচারণাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

তবে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি প্রার্থী আয়েন উদ্দিন দাবি করেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি ঘরোয়া মতবিনিময় ছাড়া কোনো কর্মসূচি এখন পর্যন্ত হাতে নেননি।

রাজশাহী-৫ আসনের আসেনর এমপি প্রার্থী মনসুর রহমান বলেন, গণসংযোগ নয়, নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা শুরু হবে নির্দিষ্ট সময়মতোই।

এদিকে ফেসবুকের মাধ্যমেও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের প্রতীকসহ প্রার্থীদের নামে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বড় দুটি দলের প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কর্মী-সসমর্থকরা বেশি এগিয়ে আছেন।

এদিকে সর্বশেষ রবিবার সকাল ১০টার পর থেকে নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান মহাজোটের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা। এসময় রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

মাঠে নেমে বা ডিজটাল মাধ্যমে আগাম প্রচারণা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম আব্দুল কাদের বলেন, ‘যেভাবেই এখন প্রচারণা চালানো হোক না কেন-তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল। এই ধরনের অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। তবে রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের তেমন কোনো বড় ধরনের অভিযোগ ওঠেনি বলেও দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। নির্বাচনী পরিবেশও সুষ্ঠ ও সুন্দর আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স/আর