রাজশাহীতে বিধি-নিষেধের বালাই নেই, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলছে বাস


নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনার ঝূঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে গ্রিণ জোনে চিহ্নিত করা হলেও রাজশাহীতে মাক্সসহ স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসীনতা কাটেনি এখনো। ফলে যাত্রীবাহী বাসে পথে ঘাটে, বাস ও ট্রেনে সর্বত্রই উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। যদিও করোনা প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশনায় রয়েছে গণপরিবহণে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার। কিন্তু রাজশাহীর আন্তঃপরিবহণ ও দূরপাল্লার অধিকাংশ পরিবহণসহ ট্রেনেও মাস্ক ব্যবহারে যাত্রীদের উদাসীনতা দেখা গেছে।এমনকি বাসে হাঁফ যাত্রী পরিবহণের সিদ্ধান্ত হলেও সেটিও মানা হচ্ছে না।যাত্রীদের মুখের মাস্ক কারো পকেটে, কারো বা মুখে, কারো কারো থুতনিতে দেখা গেছে। নিয়ম মানতে বলারও কাউকে দেখা যায়নি। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নগরীর শিরোইল, রেলগেট ও ভ্রদা মোড়ের বাসস্ট্যান্ড, বাস্ট্যান্ডে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। চলন্ত বাসগুলোতেও যাত্রীদের মধ্যে মাস্ক পড়ায় উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। শুধু তাই নয়, অটো বা অটোরিক্সাগুলোর চালক থেকে শুরু করে অনেক যাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। সেই সঙ্গ পথচারীদের একই অবস্থা।

ভদ্রা মোড়েকয়েকজনবাসযাত্রীদেরযাত্রীর সাথে কথাহলেতারাজানান- ওমিক্রননিয়েসরকারের দেওয়ানতুননির্দেশনারকথাশুনেছেনতাঁরা। তবেমাস্ক ব্যবহারেরবিষয়েজানান, কড়াকড়িকরাহবেএটা জেনেকাছেমাস্ক রাখছি। কিন্তু সবসময়পড়তেভালোলাগেনা।

নগরীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী রাকিব হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় যাবো। শ্যামলী ট্রাভেলসের টিকিট কেটেছি। নতুন করে ওমিক্রনের সংক্রমণের কারণে আমি চিন্তিত। সরকারি নির্দেশনা জারি করার আগে থেকেই মাস্ক পড়ছি। কিন্তু নির্দেশনা জারি করার পরেও বাসের অন্যযাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখছিনা।’

এদিকে আন্তঃপরিবহণ ও দূরপাল্লার পরিবহণে যাত্রীদের তেমন ভিড় ছিলো না। তবে বাসে আসন সংখ্যার চেয়ে যাত্রী সমান/অতিরিক্ত ছিল। প্রায় প্রতিটি আসনেই যাত্রী ছিল।
একতা পরিবহনের ড্রাইভার মামুন বলেন, ‘আমাদের পরিবহন সরকারি নির্দেশনা মেনেই চলছে। এজন্য সে সকলযাত্রী আমরা উঠাচ্ছি না যাদের করোনার টিকা দেয়া নেই। তাছাড়া মাস্ক পরিধানএবং দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি।কিন্তু সব সিটেই যাত্রী তোলা হচ্ছে।’

এমপি সাফারি পরিবহনের টিকিট মাস্টার ডাবলু বলেন, ‘করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ নতুন করে চিন্তার ভার তৈরি করেছে। এখন আবারও বাধ্যতামূলক ভাবেই মাস্ক পড়তে হবে। ভ্যাকসিনের টিকা সনদ নিয়ে নতুন বিড়ম্বনা তৈরি হচ্ছে। তবে সিট সংখ্যার বেশি কোনো যাত্রী নেওয়া হচ্ছে না।’

অন্যদিকে, আন্তঃউপজেলা পর্যায়ের বাসগুলোতে সিটের চেয়েও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করতে দেখা গেছে। অর্ধেক সিট ফাঁকা রাখার কোনো বালাই নাই। অধিকাংশের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। এনিয়ে বাঘা থেকে ছেড়ে আসা একটি বাসের যাত্রী নুরুদ্দিন বলেন, ‘কেউ মাসক পড়ছে না, তা হলে আমি পড়ে কি হবে? গ্রামের মানুষ তো মাসক পড়া ভুলেই গেছেই। আমরাও গ্রাম থেকে আসছি। মাস্ক আনতেও ভুলে গেছে।’

অপরদিকে, রেলওয়ে স্টেশনে মাস্ক না পরেই যাত্রীসহ রেলওয়ে কর্মচারীদেরও ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এবিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রীদের উদ্যেশ্যে একটু পর পর বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। যাতে যাত্রীরা সকলেই মাস্ক পড়েন। টিকেট চেকিং এর জন্য টিকিট মাস্টার ছাড়া আর টিকিট কেনাযাত্রী ছাড়া ট্রেনে কোনো স্বজনকেও উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। প্লাটফর্মেও হাঁটতে দেওয়া হচ্ছে না।’