রাজশাহীতে শীতের প্রকোপ: গরম পোশাক কিনতে ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়

নূপুর মাহমুদ:

চারিদিকে যখন কুয়াশার চাদরে ডেকে গেছে নগরী ঠিক তখনি এক দল মানুষ আছেন যারা ছুটে চলেন ঠান্ডা কিভাবে নিবারন হবে। আর তাদেরই ঢল নামে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। সাধ্য অনুযায়ী শীত মোকাবেলা ব্যবস্থা করতে।

রাজশহীসহ সারাদেশে শীত যখন জেকে বসেছে তখন একশ্রেণির মানুষ চিন্তিত কেমন করে এক কাপড়ে পাড় করবে শীত। তখন তাদের ভরসা হয়ে দাড়িয়েছে নগরীর ফুটপাতের দোকানগুলো।

নগরী ঘুরে দেখা গেছে, ছোট, বড় সব ফুটপাত গুলোতে শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছে ভ্রম্যমান ব্যবসায়ীরা। তাই তো পুরো নগরীর জুড়ে এসব স্থানে ভির এখন ক্রেতাদের। যার মধ্যে বিশেষ করেরাজশাহী স্টীশন, গনকপাড়া মেডিকেল রোড়, রাবি ও কোর্ট শহীদ মিনারে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে সবচেয়ে বেশি।

তুলনা মূলক ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে শীতবস্ত্র কিনতে পারায় ছুটে যাচ্ছে এসব ফুটপাতে গুলোতে। এর মধ্যে বেশির ভাগ নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবৃত্ত মানুষই বেশী।

রাজশাহীর কোট শহীদ মিনার, সাহেব বাজার,রেল স্টেশন, অলোকার মোড়,লক্ষীপুর, কাজলা গেট ও বিনোদপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিশু, নারী, পুরুষসহ সব বয়সের মানুষের শীতের পোশাক রয়েছে এই দোকান গুলোতে। কোট, জ্যাকেট ,লংকোট, উলের কোট, শর্টকোট, শর্ট জ্যাকেটসহ সব ধরনের পোশাকই পাওয়া যাচ্ছে দোকান গুলোতে। এই ফুটপাত গুলো তাকালে দেখা যায় অনেক কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ভিড় জমাচ্ছে শীতের গরম কাপড় কেনার জন্য।

নগরীর গনকপাড়া ফুটপাতে কাপড় কিনতে আসা মানিক হোসেন নামের এক যুবক বলেন, কাঁচঘেরা দোকান গুলোর তুলনায় এখানে অনেক কম দামে ভাল কাপড় পাওয়া যায়। প্রতিবারের মতো এবারও এখান থেকে কাপড় কিনবো ভাবছি। তবে গতবারের চেয়ে শীত বস্ত্রের দাম একটু বেশি।

আরেক ক্রেতা আশরাফ বলেন, শীত এখন এতটাই তীব্র যে বাইরে বের হতেই ভয় লাগে। তার সাথে কাপড়ের যে দাম বৃদ্ধি পয়েছে তাতে আামাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে সব ফুটপাতের গরম কাপড়।

এ বিষয়ে ফুটপাতের দোকানদার লাল মোহাম্মদ বলেন, গত শীতে যে মূল্যে মানুষ গরম কাপড় কিনেছে তা এবার পাবেনা। কারন গতবারের চেয়ে এবার গরম কাপড়ের ১২ হাজার টাকার বেল্ট ১৬ হাজার টাকা নিচ্ছে। অথাৎ বেল্ট প্রতি ৩ থেকে ৪হাজার টাকা মূল্য বেশি ধরছে পাইকাররা।

দোকানদার বাচ্চু বলেন, শীত বেশীর সাথে সাথে বিক্রি ভালই হচ্ছে। তবে মুকামে দাম বেশির কারনে আমরাও ক্রেতাদের নিকট দাম একটু বেশি ধরছি।

তিনি আরো বলেন, হিসেব আর মূল্য যাইহোক না কেন দোকানের চেয়ে ফুটপাতে অনেক কমমূল্যে গরম কাপড় পাওয়া যায়। আর শীতর তীব্রতা বেড়ে গেলে আরো ভিড় হবে বলে আশা করেন ফুটপাতে বিক্রেতারা।

এদিকে মামুন নামের এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অতিরিক্ত শীতের কারনে অনেক ব্যবসায়ী বেশী দামে গরম কাপড় বিক্রির সুযোগ নিচ্ছে।

গিয়াসউদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, আমার মেয়েটা একটা সুন্দর সুয়েটার কিনে চেয়েছে কিন্তু সে সামর্থ আমার কই, বাজারে কিনতে গেলে অনেক দাম এতো টাকা দিয়ে কিনতে পারবোনা তাই এখান থেকে কিছু কিনে নিয়ে যাবো।

অন্যদিকে আবার অনেক পথশিশুদের দেখা যায় দারিদ্রতার মাঝে ছেড়া এক কাপড়ে পাড় করছে এই শীতের তিব্রতাকে। যারা হয়তো গরম কাপড়ের আসায় তাকিয়ে আছে সমাজের সহৃদয় মানুষের দিকে।

স/অ