‘রাজনৈতিক দলগুলো চুপ থাকলে রোহিঙ্গা-গণহত্যা বন্ধ হবে না’

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের রক্ষায় গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নিশ্চুপ থাকলে এই গণহত্যা বন্ধ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নীরব থাকলে সীমান্তেও স্থায়ী নৈরাজ্য তৈরি হবে। এ ব্যপারে বাংলাদেশ সরকারকে জাতিসংঘ, প্রতিবেশী দেশসমূহ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে নিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান এ সমন্বয়ক মনে করেন, অন্যথায় মৌলবাদী শক্তিগুলো এই সুযোগ গ্রহণ করবে এবং দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।

 

বৈঠকে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, অং সান সুকির নীরবতা গণহত্যাকে অনুমোদন করার শামিল। প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের মানবিক দায়িত্ব- রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া। বাংলাদেশ এই দায়িত্ব পালন না করলে একাত্তরের শরণার্থীদের প্রতি অবমাননা করা হবে।

 

অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় না দিলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। ফলে তাদেরকে শনাক্ত করা ও ফেরত পাঠানো আরও কঠিন হবে।

 

অধ্যাপক স্বপন আদনান বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা একদিকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে তাদেরকে সস্তায় শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করছে মাছ ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী ও মাদক চোরাকারবারীরা।

 

অধ্যাপক তানজিম উদ্দীন খান বলেন, অভিবাসন একটা বাস্তবতা। কয়েকশ’ বছর ধরে যারা মিয়ানমারে বাস করছেন, তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না।

 

অধ্যাপক প্রশান্ত ত্রিপুরা তার বক্তব্যে উদ্বাস্তু হিসেবে ভারতে যেতে বাধ্য হবার স্মৃতিচারণ করে বলেন, নাগরিকত্বহীন রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলোর রয়েছে।

 

অরূপ রাহী বলেন, প্রতিটি জাতির তার নিজের পরিচয়েই বাস করার, নাগরিকের অধিকার পাবার অধিকার রয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবে না।

 

সভায় দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবদুস সালাম লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন। গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নুসহ বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন