রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। সর্বশেষ তিনজনের লাশ উদ্ধারের পর নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৫ জনে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক হাজার ২০০ মানুষ। স্বজন আর ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা মানুষ যে যেখানে পারছেন সেখানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

নতুনপাড়া ও মুসলিমপাড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা আশ্রয় নিয়েছেন রাঙ্গামাটি বেতারকেন্দ্রে। আশ্রয়কেন্দ্র না হলেও জীবন বাঁচাতে বেতারকেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান নিয়েছে ২০টি পরিবারের ৪৫ জন মানুষ।

রাঙ্গামাটির ভেদভেদী এলাকার নতুনপাড়া ও পশ্চিম মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা আঁখি ও ইব্রাহিম জানান, এমন প্রচণ্ড বজ্রপাত আর একটানা এত ভারী বর্ষণ কোনো দিন দেখিনি। ট্যাপের পানি ছাড়লে পানি যেভাবে পড়ে সেভাবেই বৃষ্টি হয়েছে টানা দুই দিন। আর সাথে ছিল প্রচণ্ড বজ্রপাত। টানা বজ্রবৃষ্টির ফলেই তাদের চোখের সামনেই অনেক ঘরবাড়ি পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়েছে। হতাহত হয়েছেন আড়াই শতাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের এখন থাকার মতো কোনো জায়গাও নেই।

এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, রাঙ্গামাটি শহরের মানিকছড়ি, শিমুলতলী, ভেদভেদী এলাকায় পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তারা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। বিভিন্ন গ্রুপে তারা উদ্ধারকাজ করছেন।

তিনি আরো জানান, তৃতীয় দিনে তিনটি লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল বেলা ৩টায় রাঙ্গামাটি শহরে আবারো বৃষ্টি শুরু হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও লাশ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।

রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, আমরা জেলার দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সরকারের অংশ হিসেবে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং ২০ কেজি করে চাল প্রদান করেছি। আহতদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা নিয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সব রোগীর ব্যয়ভার আমরা গ্রহণ করব।

রাঙ্গামাটির সিভিল সার্জন ডা: শহীদ তালুকদার বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে আমরা চিকিৎসকরা উপস্থিত রয়েছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে ব্যাপক পাহাড়ধসে গত তিন দিন ধরে রাঙ্গমাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই সড়ক, রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়াও রাঙ্গামাটির বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনে পাহাড়ধসে গাছপালা ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহও বন্ধ। পাশাপাশি শহরে দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানি সঙ্কট। জ্বালানি তেলের অভাবে শহরে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল।

সূত্র: কালের কন্ঠ