রংপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে, রোগীরা দুর্ভোগে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিতসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিবাদে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে রবিবার (৫ মার্চ)। ধর্মঘটে যাওয়ার পর থেকে তারা হাসপাতালের কোনও ওয়ার্ডে যাননি, এমনকি জরুরি বিভাগেও দায়িত্ব পালন করছেন না। এদিকে ধর্মঘটের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

সরজমিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, আউটডোরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে দুই দিন ধরে বেশ ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে রোগীদের। জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এসেছেন সালাম নামে এক যুবক। তাকে স্ট্রেচারে করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ারও কেউ নেই। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর স্বজনরা তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেও কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক না থাকায় তাকে আধ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো। পরে ইমারজেন্সি বিভাগের একজন চিকিৎসক এসে তার চিকিৎসা করেন। সালামের মতো অনেক রোগী জরুরি বিভাগে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে রোগীরা অভিযোগ করছেন।.

রমেক হাসপাতালে রোগীরা দুর্ভোগে

অন্যদিকে আউটডোরে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানেও প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা বিপাকে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, রোগীদের অভিযোগ শোনার মতো কেউ আসছেন না।

হাসপাতালের ১৯ নম্বর সার্জিকাল ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেলো, সেখানে চিকিৎসাধীন দেড় শতাধিক রোগী দুই দিন ধরে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সিনিয়র ডাক্তাররা একবার এসে দেখে গেছেন, তারপর আর কেউ আসেনি। বদরগজ্ঞের মনি মিয়া জানালেন, তার পা অপারেশন হয়েছে কিন্তু ডাক্তার না আসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না। প্রচণ্ড ব্যাথার জন্য কী করা দরকার তা শোনার কেউ নেই। একই কথা জানালেন সদর উপজেলার মমিনপুরের আমজাদ হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার পেট থেকে পাথর অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু দুই দিন ধরে ডাক্তার না আসায় তার ব্যাথা আরও বেড়েছে। তার প্রশ্ন, ‘এভাবে কী করে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব?’

অন্যদিকে গাইনি ওয়ার্ডের অবস্থা আরও খারাপ। লাইলী বেগম নামের একজন জানান, তার সিজার করার তারিখ ছিল শনিবার। তবে এখন এই সিজার কবে হবে তা তিনি জানেন না তিনি।

ধর্মঘটের ব্যাপারে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. ফারহান জানান, তাদের দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় চন্দ্র বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে অধিক সংখ্যক চিকিৎসক কাজ করছেন। কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন