যাযাবর

অবশেষে ঘর ছেড়ে যাযাবর হলাম,
মাথা গুজব বলে। ঠাঁইটুকু নেই !
এ ধরার বুকে, সম্পূর্ণ অসহায় হলাম।
যখন’ই আত্নীয় স্বজন ভিক্ষারীনি বলে
দূরে সড়িয়ে দিল।
গরিব বলে,যখন পথে ছুড়ে দিল,
আমি পথিক হলাম।পথের-পথিক !
খোলা মাঠের পথিক,
একা আনমনে যখন-
নির্জন মাঠের চারিপাশে তাকিয়ে দেখি-
ধু-ধু কড়া রৌদ্দুর, বেশ ক্লান্তি আমার মাঝে। তবুও ধুলো জড়ানো পথ ধরে হেঁটে চলি, বাধ্যতা নিয়ে বারো মাস।
কত লোকজন এইপথে, সকলে’ই
যেন হাঁ করে তাকিয়ে থাকে !
সাদা-কালো ময়লা জড়ানো, ধূসর শাড়িতে
নিজেকে পাগল প্রায় লাগছে।
ঘুরে-ঘুরে কাজের জন্য কতলোকের হাতে পায়ে ধরে। বহুকষ্টে পেলাম !
শিউলির বাড়ির রাঁধুনির কাজ,
অনাহারি তখনও পেটে প্রচণ্ড খিদে !
নিয়ে’ই রাঁধতে হলো।
কি-সব ভেবে বেখেয়ালির কারণে-
আঁচলের কিছু অংশ পুরে গেল।
রান্না শেষ হয়েছে, সেই কখনো’ই
তবুও খেতে পেলাম কই ? তিন বেলা রেঁধে
চোখের সামনে বেশ আয়েশ করে
ভালো-মন্দ সব’ই খেলো
অবশেষেও পাইনি অন্তত দু’মুঠো অন্ন
অনেক অভিযোগ জমা বুকের মাঝে
অসহ্য লাগে, কাঁদতে ইচ্ছে হয়
চিৎকার করে।
বলতে ইচ্ছে হয় প্রতিবাদি হয়ে।
তবে কিছু’ই বলতে পারি না, ভয়ের কারণে !
যদি তাড়িয়ে দেয়? আশ্রয়টুকুও যাবে,
তখন আমি কোথায় যাব ?
কে আমাকে কাজে নিবে ?