সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যশোরের মনিরামপুরের সিদ্দিকুর রহমান গাজী ওরফে সিদ্দিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক।
সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান জানান, একাত্তরে আটক, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগে যশোর জেলার মনিরামপুর থানার সিদ্দিকসহ পাচঁজনের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৬২তম প্রতিবেদন। আজ অথবা কালকের মধ্যেই এই প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর দাখিল করা হবে।
তিনি জানান, এ মামলায় আসামি ছিলেন ১৩ জন। এর মধ্যে গ্রেফতার আছেন একজন। পলাতক ৪ জন। আর মারা গেছেন ৮ জন।
গ্রেফতারের স্বার্থে আটক আসামি সিদ্দিক ছাড়া পলাতক চার আসামির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, যশোর মনিরামপুর থানার হরেরগাতি গ্রামের মৃত বাহাদুর গাজীর ছেলে সিদ্দিকুর রহমান গাজী। একাত্তরে মনিরামপুর থানার শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন বলে জানান তদন্তকারী এই কর্মকর্তা।
এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৩৩ জনকে।
আসামি সিদ্দিকুর রহমান গাজী বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত ছয়টি অভিযোগ-
এক. একাত্তর সালের ভাদ্র মাসের ৭ তারিখ রাতে আসামি সিদ্দিকুর রহমান গাজীর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা মোকছেদ বিশ্বাসকে বাড়ি থেকে আটক করে রাস্তায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
দুই. ভাদ্র মাসের ১৫ তারিখ রাতে যশোরের মনিরামপুর থানাধীন বিজয়রামপুর গ্রামের মোজাম মোড়লকে অপহরণ, আটক ও হত্যা করা হয়।
তিন. একাত্তর সালের কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোরের মনিরামপুর থানাধীন দিকদানা ও নোয়ালী গ্রামের ৩ জন নারীকে আটক, নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়।
চার. ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোর জেলার মনিরামপুর থানাধীন দুর্বাডাঙ্গা গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করতে না পেরে তার স্ত্রীকে আটক, নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়।
পাঁচ. একাত্তর সালের ৩০ নভেম্বর যশোর জেলার মনিরামপুর থানাধীন রোহিতা ইউনিয়নের সরষকাটি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান, আব্দুল গণি ও তোজাম্মেল হোসেনকে অপহরণ, আটক ও হত্যা করা হয়।
ছয়. একাত্তর সালের ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় যশোর জেলার মনিরামপুর থানাধীন চিনাটোলা গ্রামে এক বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করে চিরটোলা বাজারের পূর্বপার্শ্বে হরিহর নদের উপর নির্মিত ব্রিজের ওপর এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাংলানিউজ