সোমবার , ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

মৎস্য খাতে জীবিকা দুই কোটি মানুষের

Paris
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯ ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন মাছ উৎপাদন হয়েছে; যার মধ্যে ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ টন ছাড়িয়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার টনে পৌঁছেছে। মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এককোটি ৯০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ বছরে গড় বার্ষিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ মানুষের। অন্যদিকে, জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান এখন ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত ১০ বছরে মৎস্য খাতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। একক প্রজাতি হিসেবে মাছের অবদান সর্বোচ্চ, যা মোট উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ। জাতীয় জিডিপিতে ইলিশের অবদান এখন ১ শতাশের বেশি।

মৎস্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, মাছ চাষযোগ্য অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়, যেমন– নদী-নালা, সুন্দরবন, বিল, কাপ্তাইলেকসহ প্লাবন ভূমির পরিমাণ এখন ৩৯ লাখ ৮ হাজার হেক্টর এবং অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়, যেমন– পুকুর, বাঁওড়, মৌসুমি চাষাধীন জলাশয় ও চিংড়ী খামার ৭ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর মিলে দেশে মোট জলাশয় রয়েছে ৪৭ লাখ হেক্টর।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশে ১২টি বিদেশি মাছসহ প্রায় ৩৫টি মৎস্য প্রজাতির মাছের চাষ হয়। অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য চাষের সম্প্রসারণের জন্য ৪৩২টি মৎস্য অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গত ৯ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৯২ হেক্টর জলাশয় পুনঃখনন করে সংস্কার ও উন্নয়নের পাশাপাশি ২০১৭-১৮ সালে ৩০৯ হেক্টর জলাশয় সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে; ফলে বছরে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত মাছের উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত গত ৯ অর্থবছরে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত দুই লাখ ৪৮ হাজার জেলে পরিবারকে ভিজিএফ সহায়তা দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮১৪ দশমিক ৭২ মেট্রিক টন। মাসে ৪০ কেজি হারে এ খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ ইলিশ’ শীর্ষক ভৌগলিক সনদ (জিআই সনদ) প্রাপ্তিতে নিজস্ব পরিচয়ে বিশ্ববাজারে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ। সাত হাজার বর্গকিলোমিটার প্রধান প্রজনন এলাকায় ছয়টি ইলিশ অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুই লাখ সাত হাজার চিংড়িঘেরও রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গোপসাগরে একলাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় মৎস্য আহরণে আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৬ সালে ‘আরভি মীন সন্ধানী’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গবেষণা জরিপ কাজ শুরু করে। এপর্যন্ত ২১টি সার্ভে ক্রুজ-পরিচালনার মাধ্যমে মাছের ৪৩০টি প্রজাতি চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে ৬৫ দিন মৎস্য-আহরণ নিষিদ্ধ করায় মাছের উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ছে। ২০০০ সালে একটি মেরিন রিজার্ভ ঘোষণা করা হয়েছে এবং হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ এলাকায় এমপিএ ঘোষণার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ, দেশে বর্তমানে ১০৪টি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে। মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রামে তিনটি বিশ্বমানের অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ সালে ৬৮ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন মৎস্যজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে সরকারের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। দেশের প্রধান রফতানিপণ্য হচ্ছে চিংড়ি (হিমায়িত, কুকড ও বরফায়িত), মাছ (হিমায়িত ও বরফায়িত), কুচিয়া/ইল (জীবিত), কাঁকড়া (জীবিত ও হিমায়িত), শুঁটকি ও লবণাক্ত শুঁটকি, হাঙ্গরের পাখনা ও মাছের আঁইশ। বর্তমানে বাংলাদেশের মাছ বিশ্বের ৫৬টি দেশে রফতানি হচ্ছে। সর্বাধিক রফতানি হওয়া ১০টি দেশ হলো– নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানি, ইউকে, চীন, ভারত, ফ্রান্স, আমেরিকা, জাপান ও রাশিয়া। মাছ ও চিংড়ির পণ্যে রেসিডিউ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ইইউ মিশন-এর সুপারিশে ইইউভুক্ত দেশে বাংলাদেশের মৎস্যপণ্য রফতানিতে টেস্ট সার্টিফিকেট জমাদানের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করা হয়েছে, এদেশের জন্য যা গর্বের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও পাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু  জানান, মাছ এখন বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। দেশের জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান অনেক। এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সরকার সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।

সর্বশেষ - জাতীয়