মোহনপুরে শতফুল এনজিও’র পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর মোহনপুরে শতফুল বাংলাদেশ এনজিও’র নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই গৃহবধূ নিজেই বাদি হয়ে গত ১৫ অক্টোবর শতফুল বাংলাদেশ এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লাকে (৪৮) আসামি করে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (২) রাজশাহীর মোহনপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৯৬/পি/২০১৯।

মামলাটি সঠিক তদন্তের জন্য ২৪ অক্টোবর মোহনপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত। আগামি ১৭ নভেম্ববরের মধ্যে প্রতিবেদনটি আদালতে প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে। নির্বাহী পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোহনপুর উপজেলার নওনগর মুন্নাপাড়া গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলী মোল্লার ছেলে। শতফুল বাংলাদেশ এনজিও’র প্রধান কার্যলয় পরিচালকের বাড়ির পাশে।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলার তশোপাড়া গ্রামের জনৈক ব্যক্তির শিশু কন্যাকে জানুয়ারি মাসে শতফুল বাংলাদেশ এনজিও’র শতফুল স্কুলে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি করান। শিশু কন্যাকে স্কুলে নিয়ে যেতেন তার মা। ওই সূত্র ধরে গৃহবধূর সাথে পরিচয় হয় শতফুল বাংলাদেশ এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লার। তারপর থেকে গৃহবধূর প্রতি কু-দৃষ্টি পড়ে পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লার। কিছুদিন পর থেকে গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে অর্থের লোভ দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন নির্বাহী পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লা। এমনকি গৃহবধূকে তার এনজিও’তে চাকরি থেকে শুরু করে মেয়েকে বিনা বেতনে পড়ালেখার প্রস্তাব দেন। নির্বাহী পরিচালকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্কুলের শিক্ষকদের দিয়ে শিশুকে মারপিট ও নির্যাতন করতেন। শেষ পর্যন্ত স্কুল ছাড়তে হয়েছে শিশুটিকে। তারপরেও পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লার হাত থেকে রক্ষা পাননি গৃহবধূ। গত ১১ অক্টোবর বিকেল ৩ টার সময় তশোপাড়া গ্রামে গিয়ে গৃহবধূর শয়ন রুমে ঢুকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে নির্বাহী পরিচালক নাজিমুদ্দিন মোল্লা।

মামলায় উল্লেখ রয়েছে, ঘটনার পরদিন ১২ অক্টোবর গৃহবধূ তার স্বামীকে নিয়ে নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেননি। তবে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, আমার জানা মতে এ ধরণের অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেননি। বিধি মোতাবেক নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে এভিডেভিট করে ১৫ অক্টোবর নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

আদালতে মামলা দায়ের পর থেকে গৃহবধূ ও তার পরিবার হুমকির মুখে রয়েছেন। মামলা তুলে নেয়ার জন্য পরিচালকের লোকজন প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ। আজ শুক্রবার তশোপাড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কথা বলে জানা গেছে, শতফুল এনজিও’র নির্বাহী পরিচালকের খপ্পরে পড়ে অনেক নারী কর্মী তাদের নারীত্ব হারিয়েছেন। তার এনজিও’তে চাকরি নেয়ার পর অনেক নারী কর্মী নির্বাহী পরিচালকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাদেরকে চাকরি হারাতে হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

মোহনপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহবুবা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। আগামী ১৭ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আদালতের কাছে আরো দুই সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।

 

স/শা