মুশফিকরা পাবেন ৬ লাখ; কোহলিরা পান ২১ লাখ!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যনির্বাহী একটি সভা শেষে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়েছে। টেস্ট সংস্করণে প্রতি ম্যাচে একজন ক্রিকেটার এখন থেকে পাবেন ৬ লাখ টাকা। এর আগে যা ছিল তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা। বেড়েছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ম্যাচ ফি। ওয়ানডেতে এর আগে ম্যাচ ফি ছিল দুই লাখ টাকা এখন ক্রিকেটাররা পাবেন তিন লাখ টাকা করে।

টি টোয়েন্টিতে ২০১৭ সাল থেকে ক্রিকেটাররা পেতেন এক লাখ ২৫ হাজার টাকা করে, এখন থেকে পাবেন দুই লাখ টাকা। তবে এই অর্থ গ্রেড অনুযায়ী পাবেন ক্রিকেটাররা। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সিরিজে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলি তিন ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ৬৫ লাখ ৬ হাজার ৮০৮ রুপি। অর্থাৎ ম্যাচ প্রতি সাড়ে ২১ লাখ রুপির ওপরে পেয়েছেন বিশ্বের সেরা এই ব্যাটসম্যান। চেতেশ্বর পুজারা পেয়েছেন ম্যাচ প্রতি ২০ লাখ রুপির কিছু বেশি।

তবে এই ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের কোনো গ্রেড নেই। চুক্তিবদ্ধ সকল ক্রিকেটার একই পরিমাণ ম্যাচ ফি পান। অ্যারন ফিঞ্চরা একটি টেস্ট ম্যাচ খেলে পান ২০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার। আজকের বাজারে টাকার অঙ্কে যা দাঁড়ায় ১১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা। একই ভাবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে পান ১০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। টি-টোয়েন্টি খেলে পান ৮ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা চার লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

এদিক থেকে পিছিয়ে আছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা টেস্ট ম্যাচ খেলে পান চার লাখ রুপি, ওয়ানডে খেলে তিন লাখ রুপি এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এক লাখ ২৫ হাজার রুপি। বেতন-ভাতা ও সুবিধাদির দাবি নিয়ে ক্রিকেটাররা নানা সময়ে আন্দোলন করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের আন্দোলন। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সাথে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার একটি বিরোধ দেখা যায়। যেখানে ক্রিকেটাররা বেতনের পাশাপাশি রাজস্ব আয়ের ভাগ চান। পরবর্তীতে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দুই পক্ষ একমত হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা বোর্ডের আয়ের ভাগও পান এরপর থেকে। সেই আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল নারী ক্রিকেটারদেরকেও পুরুষ ক্রিকেটারদের সমান সুযোগ সুবিধা দেয়া। পরবর্তীতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের বোর্ড কমিটিতে অন্তত পাঁচজন নারীর অন্তর্ভূক্তি ও নারী ক্রিকেটারদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও একই ধরণের একটি ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটে যাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের মতো বোর্ডের রাজস্বের ভাগ চায়।

সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান পেশাদার ক্রিকেটারদের একজন মুখপাত্র হিসেবে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দাবি উপস্থাপন করেন। এই দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল প্রফেশনাল ক্রিকেটারদের অ্যাসোসিয়েশন গঠন। নতুন দাবির আর একটি নারী ক্রিকেটাররা যে বেতন ভাতা পান তা যেন পুরুষ দলের সদস্যদের সমান হয়। পরবর্তীতে এক বৈঠকের পর ক্রিকেটাররা ধর্মঘট থেকে সরে আসেন। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফি বাড়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদেরও ম্যাচ ফি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করেছে বোর্ড।