মাদক নিরাময় কেন্দ্রে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

যশোর মাদক নিরাময় কেন্দ্রে মাহফুজুর রহমান (২০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে ওই যুবককে মারপিটের একটি সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ।

অভিযোগ উঠেছে শনিবার ওই যুবকের মৃত্যুর পর তার লাশ প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেখে চলে যায়। এরপর পরিবারের লোকজন জীবননগর থেকে এসে রোববার দুপুরে হত্যার অভিযোগ তোলেন।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

নিহত মাহফুজুর রহমান চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকার মনিরুজ্জামানের ছেলে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম করিম ও শহরের বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আশরাফুল কবির, চৌগাছার বিশ্বাসপাড়ার মশিয়ার রহমানের ছেলে রিয়াদ, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ভাবানীপুর গ্রামের সাবদার রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান. একই গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে আরিফুজ্জামান, যশোর শহরের কাজীপাড়া মসজিদ এলাকার কামরুজ্জামানের ছেলে ওহেদুজ্জামান, যশোর শহরের নীলগঞ্জ সাহাপাড়া এলাকার  আবদুর রশিদ মিয়াজীর ছেলে রেজাউল করিম, যশোর সদর উপজেলার আরবপুর বাশবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ওহিদুল ইসলাম, যশোর শহরের বকচর হুশতলা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল শাহরিয়ার রোকন, যশোরের বেনাপোলের শাখারিপোতা এলাকার মুকুল হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন,  যশোরের অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামের  আসার আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকার এসএমজি মুক্তাদিরের ছেলে এএসএম সাগর আজিজ, যশোর সদরের শেখহাটি হাইকোটপাড়ার ফজর আলীর ছেলে নুর ইসলাম ও  সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বামখালি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে অহেদুজ্জান সাগর।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের মালিকসহ ১৪ জন মিলে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করে অজ্ঞাত লাশের ব্যাপারে। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই যুবকের স্বজনরা হাসপাতালে এসে শনাক্ত করে। এরপর তার লাশ মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, পুলিশ তদন্তে নেমে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারপিটের কথা স্বীকার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে মারপিটের সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় জড়িত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের পিতা  রোববার কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের চাচা সাইদুর রহমান বলেন, আমার ভাতিজা মাহফুজ মাদকসেবী। তাকে গেল ২৬ এপ্রিল যশোরে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। শনিবার বিকালে খবর পাই তাকে ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন মারপিট করে হত্যা করেছে। পরে লাশ অজ্ঞাত হিসাবে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রেখে চলে যায়। আমারা পরিবারের লোকজন এসে লাশ হাসপাতালের মর্গে পাই।