মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের ইন্তেকাল, জানাজা শনিবার সকালে

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন একাশেংর আমির মাওলানা জাফরুল্লাহ খান (৭৫) শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) ১২টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ছিলেন দেশের প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক, বহু গন্থ প্রণেতা। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন একাশেংর আমির ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের দিয়ানগরের মাশরাবুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া কামরাঙ্গীরচর মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস ছিলেন।

মরহুমের জামাতা মাওলানা মাকসুদ রহমান জানান, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান চট্টগ্রাম সফর করছিলেন। চট্টগ্রামের দামপাড়ায় আল জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে যোগ দিতে তিনি সেখানে যান। সেখানে তিনি অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। জাফরুল্লাহ খান কিডনির রোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।

জানাজার সময় নির্ধারণ
মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের জানাজা আগামীকাল (শনিবার) সকাল ১০টায় নেত্রকোনা সদরের মালনি এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের জানাজার নামাজে ইমামতি করবেন তার ছেলে হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ।তাকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

মৃ্ত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র-শিক্ষক, অনুসারী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

শোক প্রকাশ
প্রবীণ আলেম ও ইসলামিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের মৃত্যুতে ইসলামি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর মৃত্যুতে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।

মাওলানা সুলাইমান নোমানীর শোক
মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন খলিফায়ে হাফেজ্জী,শাইখুল হাদিস আল্লামা সুলাইমান নোমানী। তিনি বলেন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান আমার খুব কাছের ও স্নেহের ব্যাক্তি ছিলেন। আমার সাথে তার তাসাউফের লাইনের সর্ম্পক ছিল। উনি আমার খলিফাদের মধ্যে শীর্ষ ছিলেন।

চট্টগ্রাম দামপাড়া মাদ্রাসার মুহতামিম থাকা অবস্থায় হাফেজ্জী হুজুর রাহমাতুল্লাহি আলাইহির বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে দীর্ঘদিন দলের মহাসচিবের পদ অলংকৃত করেন। তার মতো প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও লেখক এদেশের আপামর জনতা খুব কম সংখ্যক দেখেছে।

দেশের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সামনে থেকে আপামর তৌহিদী জনতাকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি একজন যোগ্য শিক্ষক ছিলেন। যার হাতে অনেক যোগ্য শাগরিদ তৈরি হয়েছে। তিনি ছিলেন বহু গ্রন্থ প্রণেতা, তার লেখা প্রায় ৪০ টির বেশি কিতাব রয়েছে। এদেশের ইসলাম ও মানুষের জন্য তার কোরবানি ভবিষ্যতে স্বর্ণাক্ষরে লেখে থাকবে।

মাওলানা রাহমানি তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করেন। তাঁর পরিবারের সকলের প্রতি সমবেদনা জানান। আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য জান্নাতুল ফেরদৌসের আলা মাকাম কামনা করেন।

ইসলামী আন্দোলনের শোক
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের একাংশের আমির প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের ইন্তেকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।

পৃথক পৃথক বিবৃতিতে মরহুমের মাগফিরাত কামনা করেছেন, দলের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সেক্রেটারী আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।

শোক বার্তায় পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান হজরত হাফেজ্জী হুজুর রাহমাতুল্লাহি আলাইহির জীবদ্দশায় খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিবের দায়িত্ব অত্যন্ত যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে পালন করেছেন। তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতেন।

তিনি রাজনীতির পাশাপাশি দরস ও তাদরিসের সাথেও জড়িত ছিলেন। তিনি বহু মসজিদ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠাসহ দীনের বহুমুখী খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। মহান রব্বুল আলামিন মাওলানার সকল নেককাজকে কবুল করে জান্নাতবাসী করুন এবং পরিবার পরিজনকে সবর করার তৌফিক দিন। আমীন।

আল্লাহ তাআলা মাওলানা জাফরুল্লাহ খানকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ