মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল এর কবিতা “প্রকৃতি-কথন”

প্রকৃতি-কথন

মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল


আমি সূর্যে দেখেছি শীতলতা,
যেমন করেছিলো শীতল
জীবনানন্দের বনলতা।

অন্যায়ের ক্ষণে সূর্য নেয়
ভয়ঙ্কর রুপ,
ন্যায়ের মুহূর্তে সে
কোমল স্বরুপ।

আমি দেখেছি, বৃক্ষও
করেছে প্রতিবাদ,
চোরকে দিয়েছি শাস্তি,
কাউকে দেয় নি বাদ।

বৃক্ষে উঠে চোর বলেছিলো,
“আজ পারবো ফল,
কে রুখবে বল?”

খানিক অন্তে বায়ু দোলে,
বৃক্ষের ডাল আঁকাবাকা নড়ে,
চোর যায় তখন নীচে পড়ে।
চোর পায় কোমড়ে ব্যাপক ব্যাথা,
ব্যাথার জোর তার ঘুরায় মাথা।

সেদিন সমুদ্র বললো, “কি ভাই, তুমি
কেন নিশ্চুপ চেয়ে থাকো?”
আমি বললাম, “কত বিচিত্র তুমি,
তুমি প্রকৃতই কত মহান,
জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ গর্ভে
নিয়ে ব্যাপক দায়িত্ববান।”

সবাই জানে, চন্দ্রের নিজস্ব
কিরণ ছিলো না কোন কালে,
সূর্য কিরণের প্রতিফলনেই
যে তার সমস্ত শরীর জ্বলে।
সেও জানে, তার নেই
নিজের আলোকশক্তি
এ কারণেই, সে রাতকে
করে বিস্তর ভক্তি।

সেদিন যাচ্ছিলাম পর্বতের
পাশ দিয়ে যখন,
শুনতে পেলাম ভূমি ও তার
কথাপোকথন।

ভূমি বলে, “অনেক দীর্ঘ ও
প্রশস্ত তুমি,
বলতে পারো আকাশটা
কত দামি?”
পর্বত বলে, “আকাশের নেই যে
কোন শেষ,
এবং তার নেই তেমন
হিংসা-বিদ্বেষ।”

ভূমি বলে, “তোমার কাছে অনেক
কিছু জানি,
তোমাকে তো কখনও
কিছুই দিই নি।”

পর্বত বলে, “আমাকে রেখেছো ধরে,
আমিও যে তোমার কাছে ঋণী।”
তাদের বললাম, “পর্বত-ভূমির
এমন মধুর বন্ধুত্ব,
জগতে বিরল মহত্ব।”

আরেকটা বন্ধুত্ব দেখেছিলাম,
অগ্নি ও অক্সিজেনের মধ্যে,
দুই-বন্ধু একত্রে জ্বলে
মারাত্মক তেজ্বে,
আসুক যেই, যত রকম
পরিপাটি সেজে।

তবে বায়ু অক্সিজেনকে সঙ্গে
নিয়ে ঘুরে না তেমন,
অক্সিজেনের টের পেলেই
অগ্নি টানে তখন।

ঐদিন প্রথমে আমি কিছু বলিনি,
আকাশই আমাকে বলেছিলো,
“সারাদিন প্রকৃতির মাঝে রয়ে থাকো,
কলমে অতি সুন্দর এর ছন্দ আঁকো!”
পক্ষান্তরে আমি বলেছিলাম, “কলম
আমার পেশীর ন্যায় শক্তি,
কলমই দেয় ন্যায়কে মুক্তি।

কলমই সুন্দরের অভিব্যক্তি।
আমি থাকতে চাই সবসময়
এই প্রকৃতির গহীনে,
অনেক জ্ঞান আছে
এই সৌন্দর্যের স্বাধীনে।”

লেখকঃ মনিরুজ্জামান শেখ রাহুল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর।