ভোলাহাটে বিষাক্ত কালটার ব্যবহারে মরছে আমগাছ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
ভারত সীমান্ত  দিয়ে চোরাই পথে আসছে কালটার। বেশি ফলন লাভের আশায় সে কালটার ব্যবহার করে  আমগাছের শিকড় কেটে রাতের অন্ধকারে অতিরিক্তমাত্রায় কালটার ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ক’বছর যেতে না যেতেই ৫ থেকে ৫০ মণ পর্যন্ত আম উৎপাদন হওয়া আমগাছ মারা যাচ্ছে।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত। এ উপজেলার প্রধান অর্থকারী ফসল আম। এক বছর আম না হলে ঘরে ঘরে দূর্যোগ নেমে আসে। আমবাগান মালিকেরা পরির্চচা করতে না পেরে এমনকি আর্থিক সমস্যার কারণে ৩ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত পাতায় আমবাগান বিক্রি করে আমব্যাসায়ীর কাছে। আমব্যবসায়ীরা নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমবাগান ক্রয় করে থাকে। পরে আমবাগান মালিকেরা আম ব্যবসায়ীদের উপর গভীর বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দিয়ে আমবাগানে যাওয়া আসা ছেড়ে দেন।
আর এরই সুযোগেই রাতের আধারে চলছে কালটার বিষ প্রয়োগের কার্যক্রম। এতে আমব্যবসায়ীরা সাময়িক লাভবান হলেও আমগাছ মরে যাওয়া চরম ক্ষতির মূখে পড়েছেন আমবাগান মালিকেরা।

 

আমবাগানকে ঘিরে গড়ে উঠা বেসরকারী সংস্থা আম ফাউন্ডেশন নানা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না খোড়া ঘুড়ার মতই অবস্থা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা বিষাক্ত কালটার থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে আমবাগান মালিকেরা জানান।

KALTAR AM GACH-2 copy

উপজেলার চরধরমপুর গ্রামের আমবাগান মালিক মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করে সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, তার তাঁতীপাড়া মৌজার, ১৭৭ নম্বর খতিয়ানের ১৭০ ও ১৭১ নম্বর দাগের ১একর ৩৩শতাংশ জমিতে ৫০টি আমগাছের একটি আমবাগান ২০১৪ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪ বছরের জন্য উপজেলার যাদুনগর গ্রামের অবৈধ আমব্যবসায়ী শাহাজাহান বাবুর কাছে বিক্রয় করে । নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করে পরে জালিয়াতি করে ২য় স্ট্যাম্পের বাম পাশে আমগাছ মরে গেলে বাগান মালিককে দায়িত্ব নিতে হবে বলে জালিয়াত করে।

 

তিনি বলেন, আমবাগানে বিষাক্ত কালটার ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে এ জালিয়াত করেছে। বর্তমানে কালটার ব্যবহারের কারণে ১৭টি আমগাছ মরতে বসেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কালটার ব্যবহারে আমগাছ মরে যাওয়ায় আমবাগান মালিকেরা চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপজেলার আমবাগানে গোপনে কালটার ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করলেও এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালানো হচ্ছে বলে জানান। তবে কালটার ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্তক থেকে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

 

এদিকে আমফাউন্ডেশন ভোলাহাটের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চুটু সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কালটার মানব দেহে যে ক্যান্সার রয়েছে তার চেয়েও ভয়াবহ কালটার। কালটার ব্যবহারে ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে ফাউন্ডেশন।

 

সচেতনমহল সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ভোলাহাটের একমাত্র অর্থকরী ফসল আমকে বাঁচাতে কালটার ব্যবহার বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।

স/শ