ভোলাহাটে ছোট্ট একটি ব্রীজের জন্য যত দূর্ভোগ

এম.এস.আই শরীফ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলার প্রত্যন্ত ছোট্ট একটি অবহেলিত উপজেলা ভোলাহাট। সোয়া লাখের উপরে এ উপজেলায় মানুষের বসবাস। মাত্র ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে এ ভোলাহাট উপজেলা। মান্ধাাত্তা আমলের চেয়ে বর্তমান সময়ে এলাকার মানুষের শিক্ষিতের বেশী। উপজেলার তিনদিক বেষ্টিত ভারত উপমহাদেশ। পশ্চিমে মুর্শিদাবাদ, পূর্বে আইহো ও উত্তরে মালদহ এবং দক্ষিণে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যাবার একটি পথ।

তিনদিক বেষ্টিত হলেও দুইদিক দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র নদী ‘মহানন্দা’। আর এই মহানন্দা নদীতেই বছরের ৩/৪টি দিনে মানুষের ঢল নামে মনোরম দৃশ্য দেখার আর নদীতে নৌকা-লঞ্চে বাইচ্ খাবার হিড়িক পড়ে যায়। এই লোকে লোকারণ্যদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি উপজেলার ২নং গোহালবাড়ী ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত মুন্সিগঞ্জহাট স্থানে একটি ছোট্ট বেলী ব্রীজের ভেঙ্গে যাওয়ায়। যার কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু সেদিকে কারোই ভ্রুক্ষেপ নেই।

আশ্চর্য্যরে বিষয় গত বর্ষা মৌসূমে এ বেলী ব্রীজটি পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এবং ব্রীজটি তৈরীর পরিকল্পনা ভুলের জন্য দমড়ে-মুচড়ে গেলেও বছর পার হলেও তৈরীর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গোচরে দিলেও কোন অলৌকিক কারণে বন্ধ রয়েছে, বেলী ব্রীজটির কার্য্যক্রম বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।


সূত্রে জানা গেছে, এ বেলী ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে অহরহ ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। ব্রীজটি ভাঙ্গার সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬/৭টি দূর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার শিকার ভুক্তভোগীরা কেউবা চিরতরে পঙ্গু হয়ে বসবাস করছে তার বাড়ীতে। আর কেউবা হাত-পা ভেঙ্গে গুরুতর আহত হতে হয়েছে। সচেতনমহল ও এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুতগতিতে সুপরিকল্পিত ভাবে এ ব্রীজটির মেরামতের ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আসছে ‘ঈদুল আয্হা’য় ফের চরম দুর্ঘটনার শিকার হবে।

উল্লেখ্য, ব্রীজটির বর্তমান অবস্থা আরো খারাপের দিকে এবং আশেপাশে বসবাসকারীদের ঘরবাড়ী ভেঙ্গে যাবার উপক্রমের কারণে তারা রাস্তার উপর ঘর তৈরী করে বসবাস করছে বলে প্রত্যক্ষ করা গেছে। বসবাসকারীদের ঘরবাড়ী যেকোন মূহুর্তে তাঁদের বুকের উপর ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে তারা অভিযোগ করেন।

তারা আরো বলেন, হামাঘেরে ঘরবাড়ী নেই, সরকারের দেয়া রাস্তার ধারে এ অল্প মাটিতে কোনমতে জোড়াতালি দিয়্যা মাথাগুজার ঘরখানটা করেছি। আর সেই বসবাস করার ঘরটাই যদি ভাইঙ্গে হামাঘেরে বুকের উপর পড়ে তাহেলে হামড়া আর কোণ্ঠে যাবো বলে কেঁদে ফেললেন ষাটোর্ধ ঈমানী আহমেদ ও মজিবুর রহমান। সরজমিনে গিয়ে ব্রীজটির বেহালদশা প্রত্যক্ষ করে ঐ এলাকার হাজারো মানুষের ভীড় জমে।

তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘থুব দিয়ে ছাত্তু সানা করলে তো ব্রীজের খারাপী হবেই। গরীবঘেরে কি মা-বাপ আছে হে। বাংলাদেশ খাইয়্যা দাইয়্যা শেষ’। এ কথা বলে মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায় তারা।

ব্রীজটির ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাষক আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ব্রীজটি পরিকল্পিত ভাবে গত ২০১৭ অর্থবছরে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু চলতি ২০১৮ অর্থবছর আরাম্ভ হলেও কাজের শুরুর পাত্তা নেই বলে তিনি জানান।
স/শ