ভোটারদের দুই বার ভোট দিতে বলে সমালোচনার মুখে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৩ নভেম্বর হলেও শুক্রবার থেকে ডাকযোগে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যের মানুষকে পাঠানো হচ্ছে ‘মেইল ইন’ ভোটের কাগজপত্র। রাজ্যটিতে ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভোটারদের দুই বার ভোট দেবার পরামর্শ দিয়েছেন।

করোনা সংকটের প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংখ্যাগুরু ভোটারই ডাকযোগে ভোট দেবেন বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। সে কারণে একাধিক রাজ্য সব ভোটারের কাছে ‘মেইল ইন’ ভোটের ব্যালট পেপার পাঠাচ্ছে। কিন্তু ট্রাম্পের এমন ‘বেআইনি’ প্ররোচনার ফলে সমালোচনার ঝড় উঠছে দেশটিতে।

কিছু রাজ্যে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এমন ভোট গণনা করা হয়। বাকি রাজ্যে সেই কাজ করা হয় নির্বাচনের পর। বিশেষজ্ঞদের মতে, রেকর্ড সংখ্যক ডাকযোগে ভোটের কারণে নির্বাচনের রাতে সার্বিক চিত্র উঠে আসবে না। আর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই ‘মেইল ইন’ ভোটের বিরোধিতা করে চলেছেন।

তার অভিযোগ, এতে কারচুপির আশঙ্কা বেশি। অবশ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি তিনি। সেই প্রক্রিয়া থামাতে না পেরে এবার তিনি নর্থ ক্যারোলাইনার ভোটারদের দুই বার ভোট দেবার ডাক দিয়েছেন। একবার ডাকযোগে, একবার সশরীরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খোদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

তার মতে, একমাত্র এভাবেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা যাচাই করা সম্ভব। সেই প্রক্রিয়া নিখুঁত হলে ডাকযোগে ভোট দেয়ার পর কোনো ভোটার দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন না।

উল্লেখ্য, নর্থ ক্যারোলাইনার মতো কিছু রাজ্যে শুধু একাধিকবার ভোট দেয়াই বেআইনি নয়, কাউকে সে কাজে উৎসাহ দেয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেমোক্র্যাটিক দলের সদস্য জশ স্টাইন এক টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ এনেছেন।

তার মতে, ভোটারদের আইন ভাঙতে উৎসাহ দিয়ে নির্বাচনে অরাজকতা সৃষ্টির কাজে সহায়তা চাইছেন ট্রাম্প। অবশ্য ট্রাম্প শিবির এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কেলেই ম্যাকএনানি ফক্স নিউজ চ্যানেলকে বলেন, প্রেসিডেন্ট মোটেই কাউকে বেআইনি কাজ করতে বলছেন না। তিনি ভোটারদের সচেতন করতে শুধু বলেছেন, যে প্রত্যেকের ভোট যাতে সত্যি নথিভুক্ত হয়, তা যাচাই করতে হবে। সেটা না হলে সশরীরে ভোট দিতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প।

ফেসবুক জানিয়েছে, ট্রাম্পের যে ভিডিওতে দুই বার ভোট দেবার ডাক দিয়েছেন, কোম্পানির নীতি মেনে সেটি সরিয়ে ফেলা হবে। কোনো মন্তব্য ছাড়া অথবা প্রেসিডেন্টের পক্ষ নিয়ে সেই ভিডিও শেয়ার করলেও ভিডিওর যে কোনো সংস্করণ সরিয়ে ফেলা হবে। টুইটারও ট্রাম্পের মন্তব্য ‘ফ্ল্যাগ’ করেছে।

চলতি বছরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডাকযোগে ভোট নিয়ে বিতর্কের পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আদালতে নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ঘিরে একাধিক মামলার কারণে অনেক রাজ্যে বিঘ্নের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আদালতের রায়ের কারণে শেষ মুহূর্তে নিয়মকানুন বদলাতে হলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। ভোট গণনার অর্থের জোগান নিশ্চিত করার বাজেট নিয়েও মার্কিন কংগ্রেসে দুই দলের মধ্যে বচসা চলছে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ