ভূমিহীন সালেহার ৫ মাসের সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস

বাঘা প্রতিনিধি:
প্রভাবশালী দ্বারা বসতবাড়ি উচ্ছেদে করা হয়েছে এক ভূমিহীন পরিবারকে। কোন জায়গা না থাকায় ৫ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে দুইদিন থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ভূমিহীন সালেহা বেগমের পরিবার।

 
জানা যায়, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সীমান্ত লালপুর বেরিলাবাড়ি গ্রামের সালেহা বেগমের পরিবারকে উচ্ছেদের পর শীত ও কুয়াশার মধ্যে বট গাছের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। তবে উচ্ছেদ করার আগে পুনর্বাসনের বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করায়, পরিবারটি এখন কোথায় যাবে, এনিয়ে অনেকটা অসহায় অবস্থাতে পড়েছে।

 

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র  চোখে পড়ে। ২৬ বছর আগে বাঘা উপজেলার বড়ছয়ঘটি গ্রামের খাঁপাড়া থেকে বাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে যায় সালেহা বেগম। তারপর বাঘা উপজেলার সীমান্ত লালপুর বেরিলাবাড়ি গ্রামে ঘর তুলে বসবাস শরু করে সালেহা বেগম। কিন্তু হটাৎ সোমবার এই পরিবারকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে জমির মালিক সাধু প্রামানিক।

 
ভূমিহীন সালেহা বেগম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমার ছেলে কাবিল হোসেনের ৫ মাসের সন্তান স্বাধীনকে নিয়ে খোলা আকাশে নিচে বসবাস করছি। দেখার কেউ নেই। যাওয়ার জায়গা নেই। এখন কি করব ৫ মাসের নাতী স্বাধীনকে নিয়ে ভেবে পাচ্ছি না। দুই যুগের বেশি সময় আগে মকবুল হোসেন, আনছার সরকার, তৎকালিন চেয়ারম্যান মক্কেল আলী, জামাল মেম্বারসহ আরো বেশ কিছু লোকজনের সহযোগিতায় ভূমিহীন হিসেবে কেবলা হোসেনের জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছিলাম। কিন্তু জমির মালিক সাধু প্রামানিক কিছুই না জানিয়ে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। বর্তমানে নিরুপায় হয়ে পড়েছি। যাওয়ার জায়গা নেই। তাই উপরে পলিথিন টানিয়ে খোলা জায়গাতে বসবাস করছি।

 
বেরিলাবাড়ি গ্রামের মকবুল হোসেন, আনছার ও সান্টু হোসেন বলেন, সাধু প্রামানিক একই গ্রামের কেবলা হোসেনের কাছে থেকে জমি ক্রয় করেছেন। বেশ কয়েক বছর আগে কেবলা হোসেন নামের এক ব্যক্তি ভূমিহীন হিসেবে সালেহা বেগমকে বাড়ি করে বসবাস করা অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু জমি বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে জমি আর কেবলা হোসেনের নেই। বাধ্য হয়ে পরিবারকে চলে যেতে হবে। তবে তাদের জমি থেকে চলে যেতে বললেও, তারা চলে না যাওয়ায় আদালতে মামলা করেন। এই মামলার রায় পাওয়ার পর উচ্ছেদ করে দিয়েছে। তবে তাদের নিজস্ব কোন জমি নেই। নিরুপায় হয়ে পড়েছে। তারপর থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।

 
জমির মালিক সাধু প্রামানিক বলেন, ১৩ বছর আগে আদালতে তাদের উচ্ছেদের মামলা করি। এই মামলার রায় আমার পক্ষে হয়েছে। ফলে তাদের উচ্ছেদ করে দিয়েছি।

 
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু ওবায়েদ ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন।