ভিড় করে ত্রাণ বিলি আর নয়, এবার এটিএম মেশিনে চাল বিতরণ!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মারাত্মক ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। খাদ্য সঙ্কট শুরু হয়েছে বেশ কিছু দেশে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মাঝে বিনামূল্যে চাল বিতরণের জন্য অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) চালু করেছে ভিয়েতনাম সরকার।

কোনও মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে, সে জন্য চালু করা হয়েছে চালের এটিএম বুথ। সেখান থেকে যাতে প্রয়োজন মতো একজন একজন করে চাল সংগ্রহ করতে পারে, সে জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় এটিএম-টি থেকে চাল নেওয়ার আগে অবশ্যই আগে হাত ধুয়ে নেওয়া হবে। দিনে বা রাতে যে কোনও সময় চাল সংগ্রহ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, এই উদ্যোগ যিনি নিয়েছেন তার নাম হোয়াং তুয়ান অ্যান। তুয়ান অ্যান একটি বৈদ্যুতিক জিনিস তৈরির কম্পানির মালিক। হো চি মিন শহরের তান ফু জেলায় তার অফিস রয়েছে। তিনি বলেন, ‘করোনা মহমারি শুরু হওয়ার পরে দেশের বহু অংশ লকডাউন করে খাবার বিলি করা শুরু হয়। কিন্তু এই ত্রাণ সংগ্রহে সব জায়গায় ভিড় জমতে দেখে আমার মাথায় আসে, এমন কোনও ব্যবস্থা যদি করা যায়, যেখানে নির্দিষ্ট সময়ে একসঙ্গে বহু মানুষ ভিড় না করে, একজন একজন করে প্রয়োজন মতো চাল সংগ্রহ করতে পারেন। এর পরেই এই অভিনব এটিএম মেশিন তৈরি করেন তিনি।

এরই মধ্যে অবশ্য করোনা যুদ্ধে রীতিমতো নজির গড়েছে ভিয়েতনাম। এখন পর্যন্ত ১০ কোটি মানুষের দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছোঁয়নি। অথচ ভিয়েতনামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ২৩ জানুয়ারি। তার পরেও শৃঙ্খলা ও প্রযুক্তি দিয়ে আটকে দেওয়া গেছে সংক্রমণ।

চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে তারা ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে তা প্রশংসনীয়। তাছাড়া  দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কম হতে পারত। গত ২ মার্চ এক ধনী ব্যবসায়ী ইউরোপের তিনটি দেশ ঘুরে ভিয়েতনামে ফিরে আসেন। তিনি করোনা পরীক্ষা না করে হ্যানয় বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কর্মচারীদের ফাঁকি দিয়ে দেশে ঢুকে পড়েন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। পরীক্ষার পরে তার করোনা ধরা পড়ে।

এর পরেই দেশে ফেরা সেই বিমানের সব যাত্রীকে কোয়ারেন্টাইন করার নির্দেশ দেয় ভিয়েতনাম সরকার। জীবাণুমুক্ত করা হয় সম্ভাব্য সমস্ত এলাকা। আশপাশের সবার করোনা পরীক্ষা করা হয়। শেষমেশ সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০। অথচ এই ঘটনার পূর্বে দেশটিতে কোভিড-১৯ রোগী ছিল মাত্র ১৭ জন!

এই ঘটনার পরে সংক্রমণ ঠেকাতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। পুরো দেশ লকডাউন করে দেওয়া হয়। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সমস্ত জায়গা থেকে খুঁজে বের করে করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পাশাপাশি ভাইরাসটি নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। করোনা ঠেকিয়ে সারা বিশ্বের কাছে এখন রোল মডেল ভিয়েতনাম।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ