ভারতীয় সীমান্তে ব্যর্থতার পর সেনাবাহিনীতে নিয়ন্ত্রণ আরো শক্ত করতে চান জিনপিং

ভারতীয় সীমান্তে ব্যর্থতার পর চীনা স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশের সামরিক নেতৃত্বে ‘আরেকটি পাশবিক শুদ্ধি’ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি টোকিও ভিত্তিক জার্নাল নিক্কেই এশিয়ান রিভিউয়ে (এনএআর) প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।

রিপোর্টটিতে দৃঢ়ভাবে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) কার্যকারিতা ও খেই হারিয়ে ফেলায় চরম অসন্তুষ্ট শি জিনপিং। তিনি নিজের সরাসরি কমান্ডের অধীনে সামরিক শক্তি আরো দৃঢ় করতে আগ্রহী। একইসঙ্গে তিনি চীনের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়েও উদ্বিগ্ন।

সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অনেকগুলো পদের মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান। এই অবস্থান তাকে কিছুটা হলেও ‘হাইব্রিড’ করে। কারণ সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে একজন কমান্ডার-ইন-চিফ বেসামরিক। আমেরিকার প্রেসিডেন্টরা যেমন। এছাড়া একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ‘চেয়ারম্যানের মতো’ জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ হচ্ছেন।

এর আগে, শি জিনপিং চীনের সামরিক বাহিনীতে হ্যান্ড-অন ম্যানেজমেন্ট পন্থা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া তিনি ২০১৬ সালে সামরিক শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করেছিলেন। একইসঙ্গ তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতি আনুগত্যে অটল এমন এক শ্রেণীর শীর্ষ কর্মকর্তা তৈরি করেছিলেন সেনাবাহিনীতে। শির বেশিরভাগ ক্ষমতার নাটকগুলোর মধ্যে এটাও একটি। বলা হয়েছিল এর ফলে সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতি কমবে, কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি।

এনএআর-এর মতে, আমেরিকা বা তিয়ানানমেন স্কয়ারের মতো শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আগে চীনের পুলিশকে আরো বেশি সামরিকীকরণ করার কথা ভাবছেন শি জিনপিং। এছাড়া সামরিক বাহিনীকে নিজের মতো করে আরো পুনর্গঠন, আরো কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং আরো শুদ্ধিকরণ কীভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবনা রয়েছে চীনা শাসকের। সবমিলিয়ে তিনি কেন্দ্রীভূত সামরিক শক্তিকে আরো শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন।

এই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গত ২৬ আগস্ট দক্ষিণ চীন সাগরে ‘বিমানবাহী রণতরী কিলার’ থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপনের মতো উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে শি জিনপিং চীনকে বেশ কয়েকটি থিয়েটারে সামরিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।

আর এই একই সময়ে তিনি সরকারি আমলাতন্ত্র এবং এর তত্ত্বাবধান কমিটিতেও পরিবর্তন আনছেন। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিকে প্রত্যক্ষ নিয়েন্ত্রণে রেখে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইউনিটগুলোর ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করছেন। শি জিনপিংয়ের প্রতিটি পদক্ষেপে এটা স্পষ্ট যে তাঁর ক্ষমতা কুক্ষিগত করার শখ রয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ