ভাঙনে নদী গর্ভে চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়, ঠিকানাহীন ৬ শতাধিক শিক্ষার্থী

বাঘা প্রতিনিধি:
ভাঙনে পদ্মা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়। ফলে ঠিকানাহীন হয়ে পড়েছে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থী। ১০ দিনেও বিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়নি। এছাড়া বিদ্যালয় ছুটিও ঘোষণা করা হয়নি।

ফলে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে এসে এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করে বাড়ি চলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শিক্ষক কর্মচারীরাও প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যাচ্ছে।

জানা যায়, বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ২ আগষ্ট ভাঙ্গন থেকে ৩০ মিটার দুরে ছিল। বিদ্যালয়টি সরিয়ে নিতে নিতে রোববার (১২ আগষ্ট) দুপুরে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। পাশাপাশি চকরাজাপুর বাজারসহ এলাকায় দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর পদ্মা গর্ভে ইতিমধ্যে বিলিন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৬১৩ জন। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছে অভিভাবকরা। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ট্রেস্ট ও ১ নভেম্বর থেকে জেএসসি পরীক্ষা শরু হবে। এ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থী ১৩২ জন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আখি খাতুন ও জেসমিন আক্তার জানায়, সামনে ট্রেস্ট পরীক্ষা, জায়গার অভাবে স্যারেরা ক্লাস নিতে পারছে না। স্কুলে এসে এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করে চলে যায়।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম জানায়, আমার বাড়ি লক্ষীনগর চরে। কষ্ট করে স্কুলে আসি। কিন্তু জায়গার অভাবে ক্লাস হচ্ছে না।

চকরাাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, রোববার দুপুরে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণভাবে পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আসবাপত্রগুলো আমার বাড়ির আঙ্গিনায় রাখা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বর্তমানে আমার বাড়িতে আসছে। কিছুক্ষণ থাকার পর চলে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত স্থান নির্ধারণ করা হয়নি। আজ/কালের মধ্যে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় লোকদের নিয়ে স্থান নির্ধারণ করব। তবে ক্লাস করার মতো পরিবেশ তৈরী করতে পারেনি।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিযুল আযম বলেন, ভাঙন থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তর দিকে কালিদাসখালী মোজায় একটি জায়গা নির্ধারণ করার কথা চলছে। এটি হলে ওখানে স্কুলটি নির্মান করা হবে। তবে দুই/এক দিনের মধ্যে স্থান নির্ধারণ হয়ে যাবে।

বাঘা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মালামাল প্রধান শিক্ষকের বাড়ি আপাতত রাখা হয়েছে। একটি স্থান নির্ধারনে কথা চলছে। এটি হয়ে গেলে টিনের ছাপরা করে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়ার পরিবেশ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, নদী ভাঙন ও বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয়েছে। অতিদূত স্থান নির্ধারনের জন্য প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

স/অ