ভর্তিচ্ছুদের বিক্ষোভে আড়াই ঘণ্টা দেরিতে রাজশাহী থেকে ছাড়লো পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

টিকেট কাটার পরও ট্রেনে যায়গা হয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা অনেক শিক্ষার্থীর। আবার অনেকেই ট্রেনের টিকেট না সংগ্রহ করেই চেপে বসেন ট্রেনের সিটে। ফলে গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) বিকাল ৪টায় ঢাকামগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার আগে জায়গা না হওয়ায় ভর্তিচ্ছু অনেক শিক্ষার্থীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। এতে ফুঁসে ওঠে রাজশাহীতে আসা ভর্তিচ্ছুরা। এক পর্যায়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে থাকা ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুইটি অতিরিক্ত বগি লাগিয়ে আড়াই ঘণ্টা দেরিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুর ২টায় ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে রাবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের অনেকেই টিকেট কেটেছেন (সিট ও স্ট্যান্ডিং)। যারা টিকেট পেয়েছেন তারা তো বিকাল ৪টার ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে নির্দিষ্ট সময়েই উঠে পড়েন। আবার হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অধিকাংশই টিকেট না কেটেই ট্রেনে উঠে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের ট্রেনে দাঁড়ানোর জায়গার চরম সংকট দেখা দেয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ট্রেন কর্তৃপক্ষ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়।

এতে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার বিকাল ৪টার পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিক্ষুব্ধ তারা আটকিয়ে দিয়ে সেখানে রেললাইনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার। আলোচনা করেন শিক্ষার্থীরাদের সঙ্গে। পরে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত দুইটি বগি লাগিয়ে অতিরিক্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বাকি শিক্ষার্থীদের রাত ১১টা ২০ মিটিটের ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে পাঠানো হবে।

বিক্ষোভের সময় ইমন নামের এক শিক্ষার্থী বলছিলেন, ‘আমি স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছি। কিন্ত হাজার হাজার শিক্ষার্থী কোনো টিকিট না কেটেই ট্রেনে উঠে গিয়েছিল। ফলে ট্রেনে তীল ধারনের ঠাই ছিলো না। এমন পরিস্থিতিতে রেল কর্তৃপক্ষ সবাইকে নামিয়ে দেয়ার কারণে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করেছে। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে।

পিউ পিংকি নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আন্দোলন ছাড়া কোনো দাবি আদায় হয় না। আমরা হাজার হাজার শিক্ষার্থী কীভাবে ঢাকায় যাবো। বাস-ট্রেন কোথাও টিকিট পেয়েছিলাম না। তবে যেতে তো হবেই। এজন্য আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করেছি।’

রাজশাহী রেলওয়ে জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জিআরপি পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিলো। পরে কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি ছাড়াই ট্রেনটি আড়াই ঘণ্টা দেরিতে রাজশাহী ছেড়ে গেছে।

উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘রাবির ভর্তি পরীক্ষার জন্য সকল ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত বগিও যুক্ত ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। পরে তাৎক্ষণিকভাবে আরও দুইটি বগি সংযুক্ত করে ট্রেনটি সাড়ে ৬টায় রাজশাহী ছেড়ে গেছে। কিছু শিক্ষার্থী স্টেশনের প্লাটফরমে থেকেই গেছে। তাদেরকে আমরা রাত ১১টা ২০ মিনিটের ট্রেনে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।’

জি/আর