ব্যানারে নাম না থাকায় সভা পণ্ড করলেন পবা উপজেলা চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার মুনসুর রহমানের নাম ব্যানারে না থাকায় একটি সভা পণ্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার উপজেলা সভাকক্ষে দি হাঙ্গার প্রযেক্টের আওয়াতায় এলাকার রাজনৈতিক নেতা ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সম্প্রীতির বাংলাদশ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর রহমানের নাম ব্যানারে না থাকায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে অতিথির সকলকে সেখান থেকে জোর করে বের করে দেন। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে।

আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অংশগ্রহণে শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের সহিংসতামুক্ত পবা গড়ার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের সহায়তায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল, ইউএসএইড, ইউকেএইড’র সহযোগিতায় এসপিএল কার্যক্রমের আওতায় এ আয়োজনটি করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর রহমান ও পবা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এবং ওয়াকার্স পার্টির রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম আশরাফুল হক তোতা ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল হক মিলনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল নওহাটা পৌর সভার মেয়র ও নওহাটা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শেখ মকবুল হোসেনের। এছাড়াও এলাকার সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরাও সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে এমপি আয়েন উদ্দিন ঢাকায় তিনি ওই সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। এর বাইরে অধিকাংশ অতিথি এবং অংশগ্রহণকারী সকাল সোয়া ১০টার মধ্যেই পবা উপজেলা সভাকক্ষে উপস্থিত হোন। আর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপস্থিত হোন উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুনসুর রহমান উপজেলা সভাকক্ষে প্রবেশ করে অতিথিদের আসনে বসে পড়েন। এরপর তিনি ব্যানারে তাঁর নাম না দেখে হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি আয়োজকদের কাছে জানতে চান কেন তাঁর নাম ব্যানারে দেওয়া হলো না। এসময় তিনি আয়োজকদের অকথ্য ভাসায় গালিগালাজও করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ব্যানারে নাম না থাকার কারণে কোনো সভা আয়োজকদের করতে দেওয়া হবে না বলে তিনি সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন এবং গালিগালাজ শুরু করেন। এতে বাধ্য হয়ে আগত অতিথিরাও বের হয়ে যান।

জানতে চাইলে দি হাঙ্গার প্রযেক্টের রাজশাহী জেলা ফেসিলিটেটর আল আমি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ব্যানারে না থাকায় তিনি আলোচনা সভাটি করতে দেননি। তবে আমরা আশাবাদি এই ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়ে আগামিতে তিনি আমাদের এই সভাটি করতে দিবেন।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও নওহাটা পৌর মেয়র শেখ মকবুল হোসেন বলেন, আমরা ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম উপজেলার চেয়ারম্যানের নিকট থেকে। ওই সময়ের মধ্যেই তাঁর নাম দিয়ে আবার নতুন ব্যানার করে আনার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু তাতেও তিনি কোনো কথা শোনেননি। তিনি গালিগালাজ করে অতিথিসহ অন্যদের বের করে দেন। এতে পণ্ড হয়ে যায় আলোচনা সভাটি।’

জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর রহমান  বলেন, ‘উপজেলাতে আলোচনা সভা হবে, অথচ আমার নাম সেখানে নাই। এ কারণে আমি আপত্তি জানিয়েছি। তবে কাউকে গালিগালাজ করা হয়নি। তারা পরে চলে গেছে।’