ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করে আয় করতে চান?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

একটি কথা অনেকেই শুনে থাকবেন ‘ডেটা ইজ নিউ ওয়েল’ অর্থাৎ তথ্য হচ্ছে বর্তমান তেল।

আর সেই তেল উত্তোলন করেই যে বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মালিক হচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বেশিরভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীই অনেক অ্যাপকে নিজেদের লোকেশনের তথ্য থেকে থেকে শুরু অনেক ধরনের তথ্যের অ্যাকসেস দিয়ে রাখেন। ফেইসবুক, গুগল আমাদের সম্পর্কে প্রায় সবই জানে। বিশেষ করে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার ঘটনার পর সবাই বুঝতে পেরেছে যে কোম্পানিগুলো আমাদের তথ্য বিক্রয় করেই অনেক টাকা কামাই করছে। সেটি যেভাবে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে তেমনি তৈরি করছে নতুন সম্ভাবনার। কয়েকটি কোম্পানি এখন টাকার বিনিময়ে ডেটা কেনার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এসব অ্যাপের কাছে আপনার ডেটা ব্যবহারের অনুমতি দিলেই মিলবে টাকা। চলুন এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানা যাক।

যেভাবে এটি কাজ করে

এই সিস্টেম অনেকভাবেই কাজ করতে পারে। সার্ভেতে অংশ নেওয়ার বিনিময়ে আপনি কিছু টাকা পেতে পারেন। আপনার লোকেশন বা গুগল বা ফেইসবুকের তথ্যের অ্যাকসেস দিয়েও আপনি টাকা কামাই করতে পারেন অথবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির পরীক্ষণে গিনিপিগ হয়েও আয় করতে পারেন। একেক পদ্ধতির জন্য একেক রকম টাকা। এই ধরুন ‘সিটিজেনমি’নামে একটি অ্যাপ সার্ভেতে প্রশ্নের জবাব দিলে টাকা দেয়। ১০টি প্রশ্নের জবাব দিয়ে আয় হবে ১০ পেন্স বা ১১ টাকার মতো। ডাটাম নামে একটি অ্যাপ আছে, যেটি লোকেশন ডেটা কিনে থাকে। পুরো মাসের জন্য এক সেন্ট দেওয়া হয়। আয় হিসেবে যা একেবারেই নগণ্য। এই ব্যবসার আরেকটি মডেল আছে। সেটি হচ্ছে পয়েন্ট মডেল।

পয়েন্ট মডেল কী?

পয়েন্ট মডেল হচ্ছে আপনি আপনার ডেটা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের পয়েন্ট পাবেন। আর সেসব পয়েন্ট ভাঙাতে পারবেন উবার, স্পটিফাই এসব অ্যাপে। এই মডেল নিয়ে এসেছে উইবসন। এখানে লোকেশন ডেটা দিলে ১৫ পয়েন্ট, ফেইসবুকের ডেটা দিলে ২০ পয়েন্ট এভাবে বিভিন্ন অ্যাপের ডেটা দিলে বিভিন্ন পরিমাণে আয় করা যায়। একজন যদি একমাসের জন্য সব ধরনের ডেটা ব্যবহারের অনুমতি দেন তাহলে ১০ ডলারের মতো আয় করা সম্ভব।

আছে অনেক সমস্যা

এতক্ষণে পাঠকের বুঝে যাওয়ার কথা ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করে খুব বেশি টাকা আয় করা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে যেভাবে কাজ শুরু হয়েছে তাতে হয়তো একদিন বলার মতো অংক আয় করার সুযোগ আসবে। প্রশ্ন হচ্ছে, টাকার জন্য কেউ ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করবেন কিনা?

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যাপগুলো আমাদের তথ্য দিয়ে টাকা উপার্জন করে বলে রাগ করে নিজের তথ্য খোলা বাজারে বিক্রি করা সমস্যার সমাধান তো করেই না বরং সমস্যাকে আরও প্রকট করে। কারণ নিজেরা টাকার বিনিময়ে কারও কাছে তথ্য বিক্রি মানেই আরও একটি কোম্পানির কাছে আপনার তথ্য চলে যাওয়া। আর টাকা দিয়ে ডেটা কেনার কারণে সেগুলোর যথেচ্ছ ব্যবহারও করতে পারবে ওসব কোম্পানি। আর যেহেতু তথ্য নেওয়া হচ্ছে মার্কেটিং কাজে ব্যবহার করার জন্য তার মানে তথ্য বিক্রি করে ব্যক্তিগত পর্যায় হতে খুব বেশি আয় কখনও সম্ভব হবে না।

সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি মানে কেবল নিজের সম্পর্কে তথ্য বিক্রি করা নয়। ওই তথ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে পরিবার ও নিকটজনরা। সেই হিসেবে ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করে টাকা কামানো যে মোটেও ভালো কোনো আইডিয়া নয় এটা বলাই বাহুল্য।