বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহে হাতছানি দিচ্ছে যে নতুন সংকট

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বিশ্ব বাজারে খাদ্যের দাম এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপরই মূলত খাদ্যের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হয়। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দরগুলো অবরোধ করে রুশ বাহিনী। এতে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু জুলাইতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। এর আওতায় ইউক্রেন খাদ্যপণ্য রপ্তানি ফের শুরু করেছে, যা বৈশ্বিক খাদ্যের দাম কমাতে সহায়তা করছে। জুলাইতে জাতিসংঘের খাদ্য মূল্যসূচকে দেখা গেছে, দাম কমেছে নয় শতাংশ। তাছাড়া আগস্টে কমেছে প্রায় আরও দুই শতাংশ।

আশার কথা হলো আগস্টে খাদ্যের দাম ইউক্রেনের বন্দর অবরোধের পূর্বে যা ছিল সে পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত মাসে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেন ১৬ লাখ টন খাদ্যপণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ভুট্টা, গম ও তৈলবীজ। তাছাড়া একই মাসে ছোট ছোট নদী, রাস্তা, ট্রেন ও সাগর পথে ৩০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অক্টোবরের মধ্যে দেশটির মোট খাদ্যপণ্য রপ্তানি ৬০ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে। এমন অনুকূল পরিস্থিতিতে খাদ্যের দাম কমছে উল্লেখযোগ্য হারে।

ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্যের ১০ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ করে। তারা বিশ্বের গম রপ্তানির ৩০ শতাংশের পাশাপাশি সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে। কমপক্ষে ২৬টি দেশ তাদের অর্ধেকেরও বেশি খাদ্যশস্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশ ও ইউরোপজুড়ে ভয়াবহ খরা-তাপপ্রবাহ নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গত মাসে ইউরোপীয় কমিশন এক পূর্বাভাসে জানায়, ২০২২ সালের জন্য ভুট্টার ফলন বিগত পাঁচ বছরের গড় হিসাবে ১৬ শতাংশ কম হবে। ফ্রান্স আশা করছে ভুট্টার ফলন এই শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ ভুট্টা উৎপাদনে বার্ষিক ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্যর মূল্য ফের বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি খাদ্যের মূল্য কমলেও এখনো সাধারণ মানুষের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। জাতিসংঘের বর্তমান সূচক গত বছরের আগস্টের চেয়ে এখনো ৮ শতাংশ বেশি ও গত পাঁচ বছরের গড় হিসেবে ৩৪ শতাংশ বেশি। তাই বৈশ্বিক বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ