বৈরুতের মতো বিস্ফোরণের ঝুঁকি ভারতে!

গত সপ্তাহে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় দুইশ’ জন, আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি। শক্তিশালী এ বিস্ফোরণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বৈরুত বন্দর, ধূলিসাৎ শহরের প্রায় অর্ধেকটাই। বলা হচ্ছে, বন্দরের গুদামে প্রায় সাত বছর ধরে মজুত করে রাখা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণেই ঘটেছে এ ধ্বংসযজ্ঞ।

বৈরুতে বিস্ফোরণের পর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে, বিশ্বের আর কোথায় কোথায় মজুত রয়েছে বিপজ্জনক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ঝুঁকিতে রয়েছে আর কোন শহর। জানা গেছে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেন্নাইয়ে বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত করে রাখা হয়েছিল বিপজ্জনকভাবে। অর্থাৎ সেখানেও ঘটতে পারত বৈরুতের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারতের অন্যতম জনবহুল শহর চেন্নাইয়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে মাত্র আধা মাইল দূরেই মজুত ছিল প্রায় ৭৪০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৩৭টি কন্টেইনারে রাখা ছিল এ বিস্ফোরণযোগ্য রাসায়নিক।

২০১৫ সালে কৃষিকাজে ব্যবহারের কথা বলে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এসব অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করেছিল একটি কোম্পানি। কিন্তু তামিলনাড়ুর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এর ছাড়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে আইনি লড়াই চলার পর তদন্তে বেরিয়ে আসে, কোম্পানিটি ভুয়া লাইসেন্স দেখিয়ে অবৈধভাবে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করেছিল। তারা খননকাজে যুক্ত বেসরকারি ব্যক্তি ও কোম্পানির কাছে এসব রাসায়নিক বিক্রিও করত।

সবচেয়ে ভয়ের কথা, ২০১৫ সালের এক বন্যায় মজুত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে এর কিছু অংশ নষ্ট করে ফেলা হয়। বাকি ৬৯৭ টন সম্প্রতি নিলামে তুলে পার্শ্ববর্তী রাজ্য তেলেঙ্গানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট স্বাভাবিক অবস্থায় পুরোপুরি স্থিতিশীল। তবে কোনওভাবে দূষিত হলে (যেমন- তেল লাগলে) এটি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।