বেকার ভাতার মেয়াদ বাড়িয়ে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর ট্রাম্পের

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে থাকা বেকারদের ভাতার মেয়াদ বাড়ানোর নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও দেশটির রাজনীতিকরা বেকার ভাতার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেননি।

ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের ফলে, এখন থেকে দেশটির বেকার ভাতা সপ্তাহে ৬০০ ডলারের পরিবর্তে ৪০০ ডলার করে দেয়া হবে। জুলাই মাসে এই ভাতা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। তবে নতুন করে ভাতার পরিমাণ কমিয়ে মেয়াদ বাড়ানো হলেও তা কতদিন পর্যন্ত চলমান থাকবে সেবিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস।

তবে এই ভাতার ৭৫ শতাংশ তহবিল আসবে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে, বাকি ২৫ শতাংশ প্রাদেশিক সরকার পরিশোধ করবে।

এছাড়া বছরে এক লাখের কম ডলার আয়কারীদের কর মওকুফের একটি আদেশেও সাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পে রোল ট্যাক্স (মজুরি থেকে কাটা কর) স্থগিতের এই সুবিধায় দেশটির কর্মজীবীদের ফেডারেল কর পরিশোধ করতে হবে না। মানুষকে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ না করা এবং শিক্ষার্থীদের ঋণ দেয়ার বিষয়েও নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারলে পে রোল ট্যাক্সের সুবিধা আরও বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে ট্রাম্পের জাতীয় গলফ ক্লাবে এসব নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট। এ সময় ক্লাবের সদস্যদের উল্লাস করতে দেখা যায় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফক্স নিউজ।

কংগ্রেসে করোনাভাইরাস নিয়ে অচলাবস্থার জন্য দেশটির বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটকে দায়ী করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাটরা সবকিছুতেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এমন অবস্থায় আমি নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমরা আমেরিকানদের চাকরি বাঁচাতে এবং কর্মীদের ত্রাণ সরবরাহ করতে যাচ্ছি।

এছাড়া বাসাভাড়া না দিতে পারা ভাড়াটিয়াদের আইনগতভাবে উচ্ছেদের প্রক্রিয়াও স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে তা ছড়িয়েছে। এই ভাইরাসে বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি।

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশটির অর্থনীতিও মারাত্মক সঙ্কটের মুখে পড়েছে। করোনা মহামারিতে লাখ লাখ মানুষ কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। প্রায় থমকে যাওয়া মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে আগামী নভেম্বরে নির্বাচনের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। করোনা মহামারি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটিতে তার জনপ্রিয়তা কমে গেছে বলে সম্প্রতি একাধিক জনমত জরিপে উঠে এসেছে।